শাবির শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

শাবি প্রতিনিধি;
  • প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১ বছর আগে

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় মিনহাজুল আবেদীন (২৬) নামের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সালামতপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

মিনহাজুল আবেদীন উপজেলার সালামতপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে। তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি রোবোটিকস-বিষয়ক সংগঠন ‘রোবোআড্ডা’র প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতিও ছিলেন।

মিনহাজুল আবেদীনের বাবা ফারুক হোসেন জানান, মিনহাজুল ১৫-১৬ দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িতে আসেন। তিনি রোবট নিয়ে গবেষণা করতেন। তিনি প্রায়ই সারা রাত জেগে রোবট নিয়ে কাজ করতেন। রোবট নিয়ে কাজ করতে করতে মিনহাজুল মানসিক রোগী হয়ে যান। তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসক দেখানো হয়েছে। স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষায় একটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছিলেন। এ নিয়ে হতাশা ছিল মিনহাজুলের।

ফারুক হোসেন আরও বলেন, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে খাবার খেয়ে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে অনলাইনে মিটিং করছিলেন মিনহাজুল। পরে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে তাঁর স্ত্রী ছেলের ঘরে আলো জ্বলতে দেখেন। তখন তিনি জানালা দিয়ে দেখতে পান, ছেলে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন। পরে দরজা ভেঙে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে সকালে মিনহাজুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

উপজেলার খেদাপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) সমেন বিশ্বাস বলেন, মিনহাজুলের আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তিনি রোবট নিয়ে গবেষণা করতেন। রোবট নিয়ে কাজ করতে করতে মানসিক রোগী হয়ে যান। আগেও একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তা ছাড়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০ শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে বিদেশে যাওয়ার কথা ছিল। অন্যরা চলে গেছেন, কিন্তু ভিসা জটিলতায় তিনি যেতে পারেননি। এ নিয়েও তাঁর মধ্যে কিছুটা হতাশা ছিল বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রশীদ বলেন, মিনহাজুল আবেদীন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। মিনহাজুল বেশ কিছুদিন ধরে হতাশাগ্রস্ত ও বিষণ্ন ছিলেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভাগের পরীক্ষায় তিনি অংশ নেননি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি বাড়িতে রয়েছেন। বাড়িতে যাওয়ার পর মিনহাজুল একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হতাশা এবং বিষণ্নতা নিয়ে লিখেছিলেন।

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহীন বলেন, ‘মিনহাজুল অত্যন্ত ব্রাইট স্টুডেন্ট ছিলেন। আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় মিনহাজুল বাংলাদেশের হয়ে প্রথম রানারআপ হয়েছিলেন। রোবোআড্ডা নামের একটি সংগঠনের হয়ে রোবট কীভাবে জীবনকে সহজ করতে পারে, সেটা নিয়ে কাজ করতেন। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেমিনার করতেন। যশোরের একটি কলেজে সেমিনারে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি কেন এমনটি করলেন তাঁরা তা বুঝতে পারছেন না।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি