প্রথম মেয়র কে হচ্ছেন বিশ্বনাথ পৌরসভার

কামাল মুন্না, বিশ্বনাথ;
  • প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২২, ৯:২৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

বহুল প্রতিক্ষিত সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন বুধবার। এখানে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে চারজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা বেশি। ভোটের হিসাব-নিকাশ শেষে বিজয়ী কে হবেন, এ নিয়েই এখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ নির্বাচনে চতুরমুখী লড়াই হওয়ার কথা থাকলেও ভোটাদের সমীকরণ বলছে অন্যকিছু।

ভোটার ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি নির্বাচনে প্রার্থী না দিলেও দলের কমান্ড অমান্য করে উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি জালাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্য নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুমিন খান মুন্না ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। আর বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকায় আওয়ামীলীগের প্রার্থী ফারুক আহমদ ও মহিবুর রহমানের মধ্যে হতে পারে মূল লড়াই।

আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ২০ কেন্দ্রে ১১৮টি ভোটকক্ষে ৩৫ হাজার ৪৭০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ২৭৯, নারী ভোটার ১৭ হাজার ১৯১ ইভিএম-এ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাত প্রার্থীর মধ্যে ৩জন দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। তাঁরা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ফারুক আহমদ (নৌকা প্রতীক), বাংলাদেশ জমিয়তে ইসলাম মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শিব্বির আহমদ (খেজুরগাছ), আল-ইসলাহ মনোনীত প্রার্থী ফয়জুল ইসলাম (চামচ)। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান (জগ), উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি জালাল উদ্দিন (হেঙ্গার), যুক্তরাজ্য নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মুমিন খান মুন্না (মোঠো ফোন) ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (নারকেলগাছ) প্রতীক। এছাড়াও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ১৫ ও কাউন্সিলর পদে ৬০ এরমধ্যে ৫৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় কেবলমাত্র মেয়র ও নারী কাউন্সিলর এ দুই পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

ফারুক আহমদ বলেন, বিশ্বনাথ পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন হবে। তাই সরকারের উন্নয়ন বিশ্বনাথে আরো বেগবান করতে ‘ভোটারেরা আমাকে দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

মুহিবুর রহমান বলেন, আমার বিশ্বাস আমি বিজয়ী হব। কারণ আমার ভোটার বেশি। তবে নৌকা নয় বরং জালাল উদ্দিন আমার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

জালাল উদ্দিন বলেন, আমি বিএনপির প্রার্থী নয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে আছি। শেষ প্রচারণায় মানুষের ঢল নেমেছে। বিজয় নিশ্চিত শতভাগ আশাবাদী।

মুমিন খান মুন্নার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর অনুসারীরা বলছেন, নির্বাচনে না থাকলেও বিএনপি বড় একটি অংশ আমার সাথে আছে। আমার বিজয় নিশ্চিত হবে। উপজেলার সব পর্যায়ের ভোটারদের সঙ্গে মুন্নার সুসম্পর্ক আছে। তাঁদের সুখ-দুঃখে সব সময় তিনি পাশে ছিলেন। ভোটাররা তাঁকে নিরাশ করবেন না।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পূনর্বিন্যাস বিষয়ক জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) এক সভায় বিশ্বনাথকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন ২০০৯ এর ৪২ ধারার (১) উপধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে তৎকালীন ইউএনও বর্ণালী পালকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারপর ৯টি ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ করে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পৌরসভার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান জানান, সকল ধরণের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ৭টি স্তরে কাজ করছে প্রশাসন। ম্যাজিষ্ট্যোট, মোবাইল টিম, স্ট্যান্টবাই, র‌্যাব, স্টাইকিং ফোর্স, বিজিবি, আনসার বাহিনী রয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে স্বস্বস্ত্র পুলিশ ও আনসার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার চাদরে আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছি। প্রতিটি কেন্দ্রে ১জন করে ম্যাজিস্ট্রেট, দুই ফ্লাটুন বিজিবি, পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য নির্বাচনের আগের তিনদিন থেকে বিশেষ মোবাইলটিম সার্বক্ষণিক নজরদারী চলমান রয়েছে।

 

 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি