সব
দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা ও মেয়াদোর্ত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে কমিটি বিলুপ্তের জের ধরে বিকেল থেকে বিশ্বনাথে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করতে শুরু করে। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে পৌরশহরে পাল্টাপাল্টি মিছিল, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মনে আতঙ্ক জড়িয়ে পড়ে। এসময় পথচারী দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করেন।
জেলা ছাত্রলীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকায় ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেট জেলা শাখার এক জরুরী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এতে আরও বলা হয়, বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার নতুন কমিটি গঠনের লক্ষে কর্মীসভার তারিখ দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর পরই পৌরশহরে অনন্দমিছিল বের করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুকনের গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মিছিল শেষে বাসিয়া সেতুর উপর পথসভা করে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে আনন্দ মিছিলের পর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে পৌরশহরে মিছিল বের করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নাম উল্লেখ্য করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু নিজের ফেসবুক একাউন্টে একটি কটাক্ষমূলক স্ট্যাডাস দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এর জের ধরে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা পৌর শহরের পুরাণ বাজারস্থ পাপ্পুর নেতৃত্বাধীন উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে (একাংশ) হামলা করে। হামলায় বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু, ছাত্রলীগ নেতা আবির আহমদ, মাহফুজুর রহমান সালমান, মাছুম খান, রাজীব আহমসহ তাদের পক্ষের ১০/১২ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাপ্পু গ্রুপের নেতাকর্মীরা পুনরায় পৌর শহরে মিছিল করলে তাতে হানা দেয় ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়তন্ত্রে আসে। তবে এঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু বলেন, বিএনপির দুঃশাসন ও ওয়ান ইলিভেনের সময় আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার কারণেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুমোদনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পাই। অথচ আজ (বুধবার) হঠাৎ করে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে জেলার সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করে। এর পর রাহেল সিরাজের নির্দেশে রাজু, শামীম, রিপন, আসলাম, জাকির, সিরাজুল’সহ ৩০/৩৫ অস্ত্রধারী উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে (একাংশ) হামলা করে। এতে আমিসহ ১০/১২ নেতাকর্মী জন আহত হয়েছে। আমি এ ঘটনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ ও সুবিচার কামনা করছি। জেলার অবৈধ কমিটি বিলুপ্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।
তাদের (পাপ্পু) কার্যালয়ের হামলার সাথে আমাদের কেউ জড়িত নয় দাবী করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন সিলেটভিউ-কে বলেন, সন্ধ্যার পর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাপ্পু-রুহেলের নেতৃত্বে মিছিল বের হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করেছে। এখন সে আমাদের মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকাতে পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি