ছাতকে ভাড়া বৃদ্ধি: যাত্রী ভোগান্তি চরমে

শংকর দত্ত, ছাতক ;
  • প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:০৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

সুনামগঞ্জের ছাতকে ফোরষ্ট্রোক-সিএনজি চালকদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে যাত্রী সাধারণ। চালকরা তাদের ইচ্ছেমত ভাড়া বৃদ্ধি করে তা আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে। কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এখানের কয়েকটি রোডে নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে সিএনজি চালকরা। প্রতিনিয়ত যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারনে ঝগড়ায় লিপ্ত হচ্ছে।

ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ যাত্রীরা ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ ও ছাতক-সিলেট সড়ক পথে সিএনজি ভাড়া কোন কারন ছাড়াই বাড়ানোর দ্বাবিতে ও অসৌজন্য মূলক আচরনের কারনে মৌখিকভাবে গোবিন্দগঞ্জ টিআই মুকুলের কাছে অভিযোগ দেন বলে জানান সেই টিআই।

একইভাবে ছাতক-দোয়ারা, ছাতক-সুনামগঞ্জ ও ছাতক-জাউয়া সড়ক পথেও অতিরিক্ত সিএনজি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক পথে যাত্রীরা এখন অসহায়। কতিপয় অটোটেম্পো অটোরিক্সা পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সহযোগিতার এসব সড়ক পথে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় চালকরা এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় যাত্রী সাধারনের দাবি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এসব সড়কে দূরত্ব অছুযায়ী ভাড়ার একটি নির্ধারিত তালিকা প্রতিটি ষ্ট্যান্ডে সাঁটিয়ে রাখা হলে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ার হয়রানী থেকে মুক্ত হতে পারবে।

জানা যায়, ১৬৯৩ সংগঠনের নেতাদের আদেশ ছাড়াই ভাড়া বাড়িয়েছে। এসব সড়ক পথে বর্তমানে সহস্রাধিক সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়মিত চলাচল করছে। সরকারী বিগত কয়েক বছরে ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কের ভাড়া কয়েক ধাপে দুইগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৮ সালে ছাতক থেকে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত ১৩ কিমি ভাঙা সড়কের অজুহাতে ১৩ টাকার ভাড়া থেকে কয়েক বছরে তা ৩০ টাকায় উন্নীত করে সিএনজি চালকরা। পরবর্তিতে সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হলেও ভাড়া কমিয়ে আনা হয়নি।

একইভাবে ছাতক-সিলেটের ভাড়া ৩৫ টাকার স্থলে ওই সময় ভাঙা সড়কের অযুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে তারা ৮০ টাকা আদায় করেছে। বর্তমানে ছাতক থেকে সিলেট পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিমির জন্য সিএনজি ভাড়া ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। গোবিন্দগঞ্জ থেকে সিলেট ৭০টাকা। ছাতক থেকে দোয়ারাবাজার পর্যন্ত মাত্র ৯কিলোমিটার রাস্তার জন্য ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৪৫ টাকা। দোয়ারা থেকে সিলেট পর্যন্ত ১২০ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।

গোবিন্দগঞ্জ থেকে নিয়মিত যাত্রী রাজু,মিটু, হেলাল জানান- অল্প বেতনে চাকুরি করি। চালকরা কোন কারন ছাড়াই ৩০টাকা থেকে ৪০টাকা করেছে। আমাদের বেতন বাড়ানি। বরং দ্রবমূল্যসহ অন্যান জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। আমরা কি করবো। ভাড়া ৩০টাকা বল্লে সিএনজি চালকরা বলেন গাড়ী থেকে নেমে যান। এমন খারাপ আচরন করেন।

ছাতক থেকে নিয়মিত সিলেটে যাতায়াতকারী একাধিক ছাত্র-ছাত্রী যাত্রীরা জানান, সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে। সন্ধ্যার পর পরই সিলেট থেকে ছাতকে আসতে তাদের ১২০-১৩০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায় থেকে তাদের বিরত রাখা সম্ভব হবে না।

ভাড়া ভাড়ানোর ব্যাপারে অনুসন্ধানে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা অট্রোটেম্পু সিএনজি ১৬৯৩ সংগঠনটির কিছুদিন পর নির্বাচন বর্তমানে নেতৃত্ব শূণ্য। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে সুযোগ সন্ধানী ড্রাইভাররা। যদিও অফিস থেকে ভাড়া ভাড়ানোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সময় এসেছে সিএনজি অটোরিকশা খাতেও সরকারের নজরদারি বাড়ানোর। প্রয়োজনে এজন্য স্বতন্ত্র ‘প্যাট্রোলিং সেল’ গঠন করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে নতুন সিএনজি নিবন্ধনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে। অবসান ঘটবে যাত্রীদের দুর্ভোগ এমনটাই জানিয়েছেন ছাতকের বিশিষ্ট জন।

এব্যাপারে উক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, আপনার তথ্যের ভিত্তিতে আমি ছাতক গোবিন্দগঞ্জ ও জাউয়া টিআই গণকে নির্দেশ প্রদান করেছি দ্রুত সমাধানের জন্য।

সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, অটোরিক্সা ভাড়া বৃদ্ধির ব্যাপারে পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও থানার ওসি সাহেব কে যাওয়ার পূর্ব বিষয়গুলো বলে যাবো।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি