বড়লেখায় প্রশাসনের অভিযানে দখলমুক্ত হলো খাসিয়া পানজুম

মো: আদিব মজিদ, বড়লেখা;
  • প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২১, ৯:২৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৩ বছর আগে

জবর দখলের আট দিন পর মৌলভীবাজারের বডলেখা উপজেলার খাসি সম্প্রদায়ের বনাখলা পানপুঞ্জির ভূমি উদ্ধার করেছে প্রশাসন।

৪ জুন শুক্রবার বড়লেখা উপজেলার নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীর নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ছোটলেখা চা বাগানের অন্তর্গত বনাখলা পানপুঞ্জিতে অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে খাসিয়াদের পানপুঞ্জিতে অবৈধ দখলকারিদের উচ্ছেদ ও অবৈধ ভাবে নির্মিত ঘর উচ্ছেদ করা হয়। অভিযানকালে দখলদারদের পাওয়া যায় নি।

অভিযানে অংশ নেন অতিরিক্ত পুুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাউসার দস্তগীর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূসরাত লায়লা নীরা, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন ।

জানা যায়, গত শুক্রবার (২৮ মে) সকালের দিকে বনাখলাপুঞ্জির কয়েকটি জুম দখলের ঘটনা ঘটে ।বনাখলাপুঞ্জি ছাড়াও ওই বাগানের আওতাধীন আগারপুঞ্জি নামের আরেকটি পুঞ্জির খাসিয়াদের সহস্রাধিক পানগাছ কেটে ফেলে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা।

গত শনিবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় এই ঘটনা ঘটে। ছোটলেখা চা-বাগান কর্তৃপক্ষ চা চাষের জন্য ১ হাজার ৯৬৪ দশমিক ৫০ একর টিলাভূমি সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেয়। পরে তারা ২৭২ একর জমি খাসিয়াদের কাছে উপ-ইজারা দেয়। ২০০৭ সালে খাসিয়ারা ওই জমিতে বনাখলাপুঞ্জি নামে বসতি স্থাপন করে। এরপর সেখানে পান চাষ শুরু করে। পুঞ্জিতে বর্তমানে প্রায় ৩৬টি খাসিয়া পরিবারের দেড় শতাধিক সদস্য থাকে। প্রতিটি পরিবারের আলাদা পানের জুম আছে।

গত ২৮ মে বোবারথল এলাকার আব্দুল বাছিত, পিচ্চি আমির, লেছই মিয়ার নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুঞ্জিতে ঢুকে তিনটি পানের জুমের দখল করে নেন। এ সময় তারা সেখানে একটি অস্থায়ী ঘরও নির্মাণ করে। তখন জুমে থাকা খাসিয়াদের তারা তাড়িয়ে দিয়ে বলে এক সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে ১০ লাখ চাঁদা না দিলে তারা জুমে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রাণের ভয়ে খাসিয়ারা ছোটলেখা চা বাগানের ডাকবাংলোয় আশ্রয় নেন।

এই ঘটনায় পুঞ্জির নারী মান্ত্রী (পুঞ্জি প্রধান) নরা ধার ও ছোটলেখা বাগানের প্রধান টিলা করণিক মো. দেওয়ান মাসুদ রোববার বড়লেখা থানায় পৃথকভাবে দুটি মামলা করেন। অপরদিকে আগারপুঞ্জির সহস্রাধিক পানগাছ কাটার ঘটনায় সোমবার (৩১ মে) দুপুরে পুঞ্জির মান্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) সুখমন আমসে বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ।

অভিযান শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকদের জানান, খাসিয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে ও তাদের অধিকার রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি