জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে নারী পাচার, এলাকায় তোলপাড়

নাজমুল ইসলাম, জৈন্তাপুর;
  • প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৪:৩৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

সিলেটের জৈন্তাপুরের লালাখাল সীমান্ত দিয়ে একজন নারীকে ভারতে পাচাঁর করা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা ও কল্পনা। নারীকে ফিরত পেতে পিতা-মাতার আকুতি। নিখোঁজের পর কানাইঘাট থানায় দায়ের করা হয়েছে সাধারণ ডায়েরী।

এলাকাবাসী ও জিডি সূত্রে জানাযায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী বখাইরপাড় গ্রামের আলা উদ্দিন এর মেয়ে সাজিদা বেগম (২৫) নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ঘটনায় কানাইঘাট থানায় পিতা বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করে (যাহার নং-৫৯৯, তারিখ ১২-০৯-২০২০)।

নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান পেতে তারা গোটা কানাইঘাট উপজেলার সর্বত্র খোঁজাখুজি অব্যাহৃত রাখে। পরবর্তীতে এলাকাবাসী সূত্রে যানাযায় জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের লালাগ্রামের তবাই মিয়ার ছেলে কামরুল ইসলাম(৩৫) এবং নিজপাট ইউনিয়নের কামরাঙ্গী গ্রামের আনছর আলী প্রকাশ আঞ্জই মিয়ার ছেলে বিলাল আহমদ(৩৫) দীর্ঘ দিন হতে সীমান্তে চোরাকারবার, মাদক, ইয়াবা, গরু-মহিষ চোরাকারবারী সিন্ডিকেট চক্রের সক্রিয় সদস্য হয়ে কাজ করে।

এই সুযোগে তারা অবৈধ পথে সীমান্তের ওপার ভারতে অবাধ বিচরণ করে থাকে। ভারতে অবাধ যাতায়াতের সুবাধে তারা মানব পাচারকারী সিন্ডিকেটের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে। তারই ধারাবাহিকতায় চক্রটি কানাইঘাটের নিখোঁজ হওয়া সাজিদা বেগমকে অপহরণ করে জৈন্তাপুর উপজেলার দূর্ঘম পাহাড়ী অঞ্চল বাঘছড়া এলাকায় এনে নির্জন স্থানে রেখে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ভারতের মানব পাচারকারী সদস্যদের হাতে টাকার বিনিময়ে তুলে দেয়।

সাজিদার নিখোঁজের সন্ধানের এক পর্যায়ে পিতা জানতে পারেন লালাখাল গ্রামের কামরুল ইসলাম ও বিলাল আহমদ মিলে মেয়েকে ভারতে মানব পাচারকারী চক্রের নিকট বিক্রয় করে দিয়েছে। মেয়েকে ফিরে পেতে স্থানীয় এলাকাবাসীর দারস্থ হন তারা। এনিয়ে এলাকায় শুরু হয় নানা জল্পনা ও কল্পনা।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী মেয়েটির পিতা-মাতা এলাকায় এসে বিষয়টি জানালে তারা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন কামরুল ইসলাম ও বিলাল আহমদ মিলে মেয়েটিকে ভারতে টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করে দিয়েছে। তবে টাকা ফেরত দিলে মেয়েটিকে ফেরত আনা যেতে পারে। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সচেতন মহলের দাবী, চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা সীমান্ত জুড়ে তৎপর হয়ে অবাধে তাদের বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এই সুযোগে এবং লালাখাল দূর্গম পাহাড়ী এলাকা হওয়ায় অপরাধীরা এই এলাকা দিয়ে মাদক, চোরাচালান, গরু মহিষ, নারী পাচার যুক্ত হয়ে পড়েছে। দ্রুত এদেরকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।

এবিষয়ে নিখোঁজ নারীর পিতা জানান, তার মেয়েটি একটু আড়োয়া (বোকা) প্রকৃতির হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সে নিখোঁজ হয়। সর্বশেষ নিখোঁজের এক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমার বোকা প্রকৃতির মেয়েটিকে টাকার বিনিময়ে ভারতীয় নাগরিকের হাতে তুলে দিয়েছে। আমি এলাকাবাসীর কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।

১৯ বিজিবি’র লালাখাল ক্যাম্প কমান্ডারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ক্যাম্পে নতুন যোগদান করেছি। এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না, আপনার নিকট হতে জানতে পারলাম। তবে আমার কাছে নিখোঁজের বিষয় বা পাচাঁর হওয়ার বিষয়টি কেউ জানায়নি।
জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত ওমর ফারুক সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এরকম বিষয় আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। কোন অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন কারা হবে।

এবিষয়ে কানাইঘাট থানার এস.আই স্বপন চন্দ্র সরকার জানান, মেয়েটির পিতা বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি