সিসিক নির্বাচন : জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর নতুন ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • প্রকাশিত: ৯ মে ২০২৩, ৯:৪৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১২ মাস আগে

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভোট নিয়ে চলছে নানা সমীকরণ। এবার মেয়র পদে জয়-পরাজয়ে নিয়ামক বা ফ্যাক্টর হবেন নতুন ভোটাররা। এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ তরুণ ভোটার জয়-পরাজয়ের হিসাব বদলে দিতে পারেন মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।

এ অবস্থায় তরুণ ভোটারদের টানতে কৌশলী আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থী। ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জয়-পরাজয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন তরুণরা। বিষয়টি মাথায় রেখে তারুণ্যবান্ধব নানা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে রয়েছেন প্রার্থীরা।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২১ জুন প্রথমবারের মতো এই সিটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। মোট ভোটার চার লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এরমধ্যে নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের বর্ধিত অংশ নিয়ে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন।

এবার পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন। নারী ভোটার দুই লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ছয় জন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র ছিল ১৩৪টি, ভোটকক্ষ ছিল ৯২৬টি এবং অস্থায়ী কক্ষ ছিল ৩৪টি। এবার ৪২টি ওয়ার্ডে কেন্দ্র বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৫টি এবং ভোটকক্ষ এক হাজার ৩৯০টি।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের। তিনি বলেন, ‘সিটিতে আগে ছিল ২৭টি ওয়ার্ড। এবার বেড়েছে ১৫টি। এ নিয়ে ওয়ার্ড ৪২টি। বর্ধিত ১৫ ওয়ার্ডে নতুন ভোটার এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন। সব মিলিয়ে ভোটার চার লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। নতুন ভোটারের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ছয় জন।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইভিএমে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন সব ওয়ার্ডের ভোটাররা। ২০১৮ সালে সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিলেন তিন লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। ২০০৩ সালে প্রথম সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিলেন এক লাখ ৮০ হাজার ৮১৫ জন। জনসংখ্যা তখন ছিল পাঁচ লাখের অধিক। বর্তমানে ১০ লাখের বেশি।

তরুণ ভোটাররা এবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে জানালেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তরুণ ভোটারদের প্রাধান্য দিয়ে চলছে নৌকার প্রচারণা। নতুনদের পাশাপাশি যেসব ওয়ার্ড বর্ধিত হয়েছে, সেগুলোতে বেশি প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নতুনদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তারুণ্যবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে আছি।’

জয়-পরাজয়ে নতুন ভোটাররা ফ্যাক্টর হবেন বলে জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সৈয়দ তৌফিকুল হাদী। তিনি সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এবারও প্রার্থী হয়েছেন। নতুন ভোটারদের কাছে প্রতিনিয়ত যাচ্ছি উল্লেখ করে এই কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, ‘তরুণরা আমাকে ভোটের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। অধিকাংশ নতুন ভোটার আমার জন্য বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। নতুন ভোটার বেশি হওয়ায় জয়-পরাজয়ে তারাই ফ্যাক্টর হবেন।’

নতুন ভোটাররা অনেক সচেতন এমনটি দাবি করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে তরুণরা বুঝেশুনে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন, এটাই তাদের প্রতি আমার আহ্বান।’

নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার ৯ হাজার ৯৭৬, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাত হাজার ৩৬১, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজার ৪৫৮, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ হাজার ৯৪০, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৭ হাজার ৩৯৪, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৮৫৯, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ হাজার ৯৩৯, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২১ হাজার সাত, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৮ হাজার ৪১৬, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ১৮ হাজার ৫৫১, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ৭৫৭, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ হাজার ৯৯০, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ হাজার ২৯১, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৯ হাজার ৮৭৯ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ হাজার ৫৬১ জন ভোটার।

এ ছাড়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ হাজার ৩৩৭, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ হাজার ১৬৫, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজার ৯০৪, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৫৪৯, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজার ১৫১, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৫৯০, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজার ১৫, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে সাত হাজার ৭৫৩, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৯০৭, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ৩৪৫, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১৫ হাজার ৫৪৮ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ১০১ জন ভোটার।

নতুন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় হাজার ৯১০, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাত হাজার ৪৩৭, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় হাজার ৮৬৮, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার ৪৪২, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ৮৮৫, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ হাজার ছয়, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় হাজার ৭২৪, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে আট হাজার ৬০১, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ হাজার ৪৮৭, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাত হাজার ২৫৭, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ হাজার ৩৩৬, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ হাজার ১৬২, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ হাজার দুই, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে চার হাজার ৪২৮ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চার হাজার ৯৯৪ জন ভোটার।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি