গণতন্ত্র আছে বলেই বিএনপি সমাবেশ করতে পারছে: সিলেটে নানক

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২২, ১০:০২ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১ বছর আগে

আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের একাধিক সদস্যের উপস্থিতিতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (৬ নভেম্বর সিলেট নগরের রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটরিয়ামে দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

দিনব্যাপী এই প্রতিনিধি সভায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সকল ওয়ার্ড ও বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতারা বক্তব্য রাখেন। নিজেদের বক্তব্যে তারা দলের অনৈক্য-বিভেদ ও নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা এসব ছোটোখাটো অনৈক্য-বিভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করে আনার নির্দেশ দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেন, সংবিধান মেনে আগামী বছরের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচন হবে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। তাই দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে হবে।
নাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে।

বিএনপির মিথ্যাচার সত্ত্বেও দেশ এগিয়ে গেছে জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতু নিয়েও বিএনপি মিথ্যে প্রচারণা চালিয়েছিলো। বলেছিলো এ সেতু হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছেন। দেশ আজকে খাদ্যে সয়ংসম্পুর্ন। দারিদ্রতা দূরীকরণে বাংলাদেশ পুরো বিশ্বের কাছে এখন উদাহরণ।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক এমপি বলেন, আমরা এখন একটা ষড়যন্ত্রের মধ্যে আছি। এই দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের ঐক্যই কেবল এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে পারে। ফলে বিভেদ ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

নানক বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে সম্মান করেন বলেই মির্জা ফখরুলরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন। গণতন্ত্র আছে বলেই আজ তারা সমাবেশ করতে পারছেন। কিন্তু বিরোধী দলে থাকার সময় আমরা বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি। জননেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন।
বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের হাতে লাঠি নিয়ে আসার বিষয়টি উল্লেখ করে নানক বলেন, সবকিছু মেনে নেবো, কিন্তু রাজনীতির শিষ্টাচার বহির্ভুত কিছু মেনে নেয়া হবে না। লাঠি নিয়ে মিছিল মানা হবে না। এর জবাব দেওয়া হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছে ক্যান্টনমেন্টে অবৈধ প্রন্থায়, তারা আজ গণতন্ত্রের কথা বলে। এই দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন জেনারেল জিয়া।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হচ্ছে। বিএনপির এটা সহ্য হচ্ছে না। তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
হানিফ বলেন, আজ বিএনপি বলে সরকার রিজার্ভ শেষ করে দিয়েছে। অথচ বিএনপির সময়ে রিজার্ভ ছিলো মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার। আর এই সঙ্কটের সময়েও এখনও আমাদের রিজার্ভ আছে ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, সংবিধান মেনেই সময়মতো নির্বাচন হবে। কেয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। ওই চ্যাপ্টার ক্লোজ হয়ে গেছে।
আহমদ হোসেন আরও বলেন, নির্বাচনের সময় শেখ হাসিনা হবেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি যতই লাফালাফি করুক কোনো লাভ হবে না। কেবল বক্তৃতা করলেই গণ অভ্যুত্থান হয় না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেন, আমাদের অর্জন অভাবনীয়। সবক্ষেত্রে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাফল্য লাভ করেছি। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আমাদের জয়লাভ করতে হবে। প্রার্থী বুঝেশুনে দিতে হবে। আর আমাদের মধ্যকার বিরোধের নিস্পত্তি করতে হবে।

ড. মোমেন আরও বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এখন কেউ স্বস্থিতে নেই। পুরো বিশ্বই সঙ্কটে আছে। এই মন্দা থেকে রক্ষা পেতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্দায় একটু হয়তো কষ্ট পাবো, তবে আমাদের খুব একটা সমস্যা হবে না। খাদ্যের কোনো ঘাটতি হবে না।

মোমেন বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু বিভেদ আছে। তবে আমরা যদি এক হয়ে মাঠে নামি কেউ আমাদের ঠেকাতে পারবে না। কারণ আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। আর আনাদের বিরোধীরা খুব দুর্বল। তারা হাওয়ার উপরে আছে। তারা কেবল মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা মুশফিক আহম চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সিলেট-৩ আসনের সাংসদ হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানন অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি