সব
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের আতিথিয়েতায় বরণ করে নিতে প্রস্তুত সিলেটের গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো।প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এখন সবুজের সমারোহ। নয়নাভিরাম পাহাড় – টিলা নদী আর চা- বাগানের সৌন্দর্য দেখতে ঈদ পরবর্তী সময়ে প্রকৃতি কন্যা জাফলং, দেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন ( সোয়াম্প ফরেস্ট) রাতারগুল, ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য সাত পাহাড়ের মিলন মেলা পাথর ও স্বচ্ছ জলরাশির বিছনাকান্দি, অপার সৌন্দর্যমন্ডিত সবুজ গ্রাম পান্তুমাই ও জাফলংয়ের মায়াবী ঝর্ণা দেখতে পর্যটকরা ছুটে আসেন।
প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে গোয়াইনঘাটের পাহাড় – পাথর, ঝর্ণা, স্বচ্ছ পানি আর প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য আবলোন করারা জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় করেন ভ্রমণ পিয়াসী মানুষ। আর এ বছর ঈদের লম্বা ছুটি হওয়ায় পর্যটকদের উপছে পড়া ভির হবে বলে আশা করেছেন পর্যটন – সংশ্লিষ্টরা। তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের বরণ করতে আবাসিক হোটেল – মোটেল রেস্ট হাউজ ও রেস্তোরাঁগুলোতে নেয়া হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
গোয়াইনঘাটে চারটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এতে রয়েছে আলাদা সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য। এর মাঝে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভিড় করেন জাফলংয়ে।তবে বিছনাকান্দিতে পর্যটকরা ভিড় করলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ ও সৌন্দর্য বর্ধনের স্বচ্ছ জলরাশির পাথরগুলো হরিলুট হয়ে সৌন্দর্য কমে য়াওয়ায় পর্যটকদের দিন দিন আকর্ষণ হাড়িয়েছে বিছনাকান্দিতে।
জাফলংয়ের মায়াবী ঝর্ণা, পিয়াইন নদীতে স্বচ্ছ জলের স্রোতের ধারা, নদীর ওপর ঝুলন্ত ব্রিজ, সমতল ভূমিতে জাফলং চা – বাগান, তামাবিল জিরো পয়েন্ট ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের খাসিয়া পুঞ্জির নকশিয়া পুঞ্জি ও সংগ্রাম পুঞ্জি পল্লী এসব কিছুই খুব সহজেই আকৃষ্ট করে আগত পর্যটকদের।
এছাড়াও জাফলং পর্যটন এলাকায় বিজিবি সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকায় রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সিঁড়ি ও জাফলং পিয়াইন নদীর ওপর জাফলং সেতু।যে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে সমতল ভূমির চা বাগান, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলের স্রোত ধারা ও ভারতের মেঘালয়ের সবুজ পাহাড় দেখা যায়।
অন্যদিকে বিছনাকান্দিতে রয়েছে জল আর পাথরের মিতালিতে জল – পাথরের বিছানা। যেখানে জলকেলি ও হৈ- হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন পর্যটকরা।তবে অনেক সময় আনন্দ ভ্রমণে আসা পর্যটকদের অসচেতনতায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি লক্ষ্য রেখে জাফলং ও বিছনাকান্দির আকর্ষণীয় স্থান গুলোতে পর্যটক বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার নিরাপদ পর্যটন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিছনাকান্দি পর্যটন কেন্দ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ লিলু মিয়া জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরনে প্রস্তুত রয়েছে পর্যটন কেন্দ্রর ব্যবসায়ীরা।এখন থেকেই স্পষ্টে পর্যটকরা আনাগোনা শুরু করেছে। বিছনাকান্দির যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্পটের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাথর হরিলুট হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটক সংখ্যা কম হবে । পর্যটন স্পটের পাথর হরিলুট বন্ধে বার বার উপজেলা প্রশাসন কে অবহিত করলেও প্রশাসনের পক্ষ কোন ধরনের প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।তারপরও পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত রয়েছে পর্যটন বিছনাকান্দি পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা।
জাফলং পর্যটনকেন্দ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো’: হোসেন মিয়া জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে পর্যটকে ভরপুর থাকবে। আশা করছেন এ বছর রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবে।সে আলোকে দোকানিরা নতুন নতুন পণ্য ও কসমেটিক্সে দোকানপাট সাজাচ্ছেন।
জাফলং পর্যটন হোটেল – মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলু বখত জানান,এবার ঈদের লম্বা ছুটি। প্রতি বছর ঈদুল ঈদুল ফিতের ঢল নামে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের। এবারও লম্বা ছুটি হওয়ায় আশা করছি পর্যটকে ভরপুর থাকবে জাফলং। সে লক্ষ্যে আমাদের কাস্টমারদের কথা বিবেচনা করে আমরা বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছি।পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
এ বিষয়ে জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মোঃ শাহাদাৎ হোসেন বলেন,ঈদ উপলক্ষ্যে আগত পর্যটকরা যাতে নিরাপদ ভ্রমণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী কালবেলা কে জানান,ঈদের ছুটিতে গোয়াইনঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ করে জাফলং ও বিছনাকান্দিতে প্রচুর পরিমাণ পর্যটকদের সমাগম ঘটে।আজকে জাফলংয়ে পুলিশ, বিজিবি, ব্যবসায়ী পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করেছি। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এ দুটি পর্যটন কেন্দ্র সহ সব কয়টি পর্যটন কেন্দ্রে আগত পর্যটকের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারের ঈদেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। এদিকে বিছনাকান্দি পর্যটন স্পটের পাথর হরিলুট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি নলেজে আছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি