সিলেটে অভিনব পন্থায় বিড়াল চুরি, অতঃপর উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ১ মাস আগে

ছোট সংসার হাসিনা বেগম চৌধুরীর। সদস্য আরও তিনজন। ছেলে ওয়াজিহ আহমেদ, পুত্রবধু জাহানারা ইসলাম তিথী ও মটু ও তার দল। মটুই সংসারের অন্যতম আকর্ষণ। তারা চলাফেরা, খাবার, ঘুম, বিশ্রামে ছিল এক ধরনের আভিজাত্য। পাড়া বেড়ানো ছিল তার শখ। মটুকে এলাকার সবাই এক নামে চিনতো। হঠাৎ হারিয়ে যায় মটু। সবার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। পরিবারের অন্যতম এই সদস্যকে হারিয়ে অস্থির হয়ে পড়েন অন্য সদস্যরা।

এমন ঘটনা সিলেটের জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরীর পরিবারে। অভিনব পন্থায় মটু (পোষা বিড়াল) চুরির পর অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি ও শাহপরাণ থানা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সিলেট শহরতলীর বটেশ্বর এলাকার জালালনগর এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।

সিলেট নগরের পূর্ব ধোপাদিঘির পারের এই বাসায় রয়েছে পেট ফুড স্টোর নামে একটি পোষা প্রাণির খাবারের দোকান। বৃহস্পতিবার পোষা প্রাণির খাবার সংগ্রহ করতে আসেন আয়শা সিদ্দিকা (ডাক নাম: নাবিলা) নামে এক তরুণি। আসার পর অনেকক্ষণ পোষা বিড়াল দেখেন তিনি। এক পর্যায়ে বিড়ালের মালিক ওয়াজিহ ঘরের ভেতর গেলে মটুকে (পোষা বিড়াল) নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সিসি ক্যামেরা দেখে ওই তরুণির অবয়ব শনাক্ত করা হয়।

পরদিন শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সিলেট কোতোয়ালী থানায় ওয়াজিহ আহমদ একটি সাধারণ ডায়রি করেন। ডায়রি নম্বর ৬০। এরপর থেকে অভিযানে নামে পুলিশ। দিনে অভিযান শেষে রাতে খবর পাওয়া যায় বটেশ্বর এলাকার একটি বাড়িতে মটুর অবস্থান। কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হকের নির্দেশনায় এসআই দ্বীপরাজ ধর প্রিন্স ও শাহপরাণ থানার এএসআই জামান ভাইয়ের নেতৃত্বে রাতে জালালনগর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মটুকে উদ্ধার করা হয়। পরে আসামিকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আর কোনোদিন এমন কাজ করবে না মর্মে মুচলেকা দিলে আসামি আয়শাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ওয়াজিদ আহমদ বলেন, পোষা প্রাণীর খাবারের ব্যবসা রয়েছে আমার। কাস্টমার বেশে বাড়িতে এসে আমার শখের মটুকে নিয়ে ছদ্মবেশী তরুণি পালিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ দেওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ মটুকে উদ্ধার করে। কোতোয়ালী থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান ওয়াজি আহমদ।

সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ ও সিলেট সেনানিবাসে কর্মরত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, পরিবারের আরেক সদস্য জাহানারা ইসলাম তিথী বলেন, মটুকে নিয়ে আমাদের সংসার। মটুকে হারিয়ে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেই। পুলিশ প্রশাসনকে অনেক ধন্যবাদ, তারা আমোদের মটুকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরী বলেন, আমার ছেলের খুব শখের মটু এটি। আমাদের পরিবারের অন্যতম সদস্য সে। সে পুরো ধোপাদিঘির পার এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। আশেপাশের যত ব্যবসায়ী আছেন সবাই কোলে নেন, ছবি তুলেন। তাকে হারিয়ে আমরা খুব ভেঙ্গে পড়ি। অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায় আমরা প্রিয় মুটুকে ফিরে পাই।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক বলেন, পোষা প্রাণি হারানোর পর জিডি করা হলে আমি পুলিশকে নির্দেশ দেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে। কম সময়ের মধ্যে পুলিশ তাদের শখের মটুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি