সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে বজ্রপাতেই ঝরল ১০ প্রাণ

সিলেট ডায়রি ডেস্ক;
  • প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২১, ৯:৫০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৩ বছর আগে

সুনামগঞ্জ , জামালপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নেত্রকোনায় বজ্রপাতে একদিনেই ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ শিশু ও দুইজন নারী রয়েছেন।

আজ (শুক্রবার) বিকেলে ঝড়-বৃষ্টির সময় এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে এক বালু শ্রমিক মারা গেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলায় ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নেত্রকোনায় নদীতে গোসল করা অবস্থায় একজন এবং বাড়ির বাইরে কাজ করতে গিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নেত্রকোনায় বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশ থেকে গরু আনতে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় বজ্রপাতে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়ন সুনালী চেলা নদীতে ঘটনাটি ঘটে।

বজ্রপাতে মৃত ব্যক্তি সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের তেলীখাল গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র ইলিয়াস আলী (২৮)।

সকাল ৭ টার সময় বাল্কহেড নৌকা নিয়া বালু উত্তোলন করার জন্য সুনালীচেলা নদীতে আসলে হটাৎ বজ্রপাত হয়। এসময় বজ্রপাতের আঘাতে সে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে দিনভর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন চেষ্টা চালিয়েও তার লাশ এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি।

এব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার এসআই মাহমুদুল হাসান জানান, বজ্রপাতে কোম্পানিগঞ্জ এলাকার ইলিয়াস নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার সাথে থাকা আরো দুইজন আহত হয়েছেন। আমরা সহ ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সহায়তায় চলতি নদী থেকে লাশ উদ্ধারের জন্য দিনভর চেষ্টা চালিয়ে লাশ পাওয়া যায়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলায় বজ্রপাতে মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ (শুক্রবার) বিকেলে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ও চরবাগডাঙা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের পাঁচরশিয়া গ্রামের রানা আলীর স্ত্রী এ্যানি বেগম (২৬) ও তার ছেলে নূর মোহাম্মদ (৬)। অপরজন একই উপজেলার চরবাগডাঙা ইউনিয়নের বাখর আলী গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে ইয়ামিন আরাফাত (১০)।

বিকেলে ঝড়ের মধ্যে বাড়ির পাশে আম কুড়াতে যান মা-ছেলে। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান।

অন্যদিকে, চরবাগডাঙায় বৃষ্টির সময় বাগানে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ইয়ামিন আরাফাত মারা যান।

জামালপুর

জামালপুরের বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী রয়েছেন।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বকশীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব কলকীহারা গ্রামের কৃষক হরবাদশা মিয়া (৫০), একই গ্রামের আবদুল খালেকের স্ত্রী আকিজা বেগম (৩০), ভাটি কলকীহারা গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে খলিলুর রহমান (৫৫), দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার গামারিয়া গ্রামের আবেল মিয়ার ছেলে আনা মিয়া (১৫) ও মেলান্দহ উপজেলার কাজিম উদ্দিনের ছেলে তাজেল মন্ডল (৪০)।

তারা সবাই বজ্রপাতের স্থানেই মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, আজ (শুক্রবার) বিকেলে বকশীগঞ্জ উপজেলায় হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় নদীতে গোসল করা অবস্থায় হরবাদশা মিয়া, খেত থেকে ধান সংগ্রহ করার সময় আকিজা বেগম ও ধানখেতে কাজ করার সময় খলিলুর রহমানের মৃত্যু হয়।

রাজমিস্ত্রির কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন আনা মিয়া। এ সময় তিনি বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া এলাকার কৃষক তাজেল মন্ডল বাড়ির বাইরে কাজ করছিলেন। এ অবস্থায় বজ্রপাতে তিনি মারা যান।

নেত্রকোনা

নেত্রকোনার পূর্বধলায় বজ্রপাতে আশা মনি (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বৃষ্টিপাত শুরু হলে আশা মনি বাড়ির পাশের পুকুর পাড় থেকে গরু আনতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।

 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি