সিলেটে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক ;
  • প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১, ৮:০০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

৫ দফা দাবিতে সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে সিলেট বিভাগজুড়ে কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে চলছে এ ‘ধর্মঘট’। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সিলেটবাসী।

তবে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ফেডারেশন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন সিলেটের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান।

তথ্যটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজীব আলী।

তিনি বলেন, ‘আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৭টায় বিভাগীয় কমিশনার স্যার তাঁর কার্যালয়ে আমাদের নিয়ে মিটিংয়ে বসেবেন। যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি, তবে হয়তো আমরা আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসবো। তবে এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে আমরা ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবো- আমাদের পরবর্তী করণীয় কী।

সিলেটে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। হেঁটে গন্তব্যে ছুটছে মানুষ। পথে পথে দুর্ভোগ। সীমাহীন কষ্ট। ভোগান্তির শিকার এসএসসিসহ অন্যান্য পরীক্ষার্থী ও জীবন-জীবিকার তাগিদে রাস্তায় বেরনো মানুষ।

৫ দফা দাবিতে সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে পুরো সিলেট বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। এই ধর্মঘটে পথে নেমে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি সিলেটবাসী। পথে পথে যাত্রীদের দুর্ভোগের চিত্র ছিলো সোমবার দিনভর।

সোমবার সিলেট-ঢাকা মহাসড়কসহ নগরী এবং শহরতলির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ধর্মঘটের প্রথম দিনে রাস্তায় বের হয়নি গণপরিবহন। তবে চলাচল করছে কিছু সিএনজি অটোরিকশা। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, মোটরসাইকেলে করে মানুষজন চলাচল করছেন। গণপরিবহন না চলায় সোমবার সকালে এসএসসিসহ অন্যান্য পরীক্ষার্থী এবং অফিসগামীরা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। বেশিরভাগ মানুষ ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি ভাড়ায় এসব বাহনে করে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছান। বাড়তি ভাড়ার কারণে অনেকে হেঁটেও যাতায়াত করেছেন। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিকে, কিছু মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা ও পিকআপ যাত্রীবহন করলেও পথে পথে পরিবহন শ্রমিকদের বাঁধার কারণে পথের মধ্যেই যাত্রীদের নামিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন চালকরা। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে বিআরটিসি বাস চলাচল করলেও এর সংখ্যা ছিল সীমিত। দীর্ঘক্ষণ পরপর একেকটি বিআরটিসি বাস চললেও ছিলো যাত্রীদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি ও ঠেলাঠেলি দেখা যায়। অনেককেই বাসে ঝুলে যাতায়াত করতে দেখা যায়।

সোমবার বেলা ২টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমা এলাকার তেতলিতে রাস্তায় অবস্থান নেন পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় দুপাশে আটকা পড়া যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। পরিবহন শ্রমিকরা লোকজনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য করেন। অনেককে ৮-১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে সিলেট নগরীতে আসতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন বৃদ্ধ মানুষ, নারী ও শিশুরা।

এর আগে সিলেটে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। সেই সময় শেষ হয় রোববার। কিন্তু তাদের ৫ দফা দাবি আদায় হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ফলে সোমবার থেকে কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন তারা। সোমবার ভোর ৬টা থেকে সিলেট বিভাগজুড়ে কোনো ধরনের গাড়ি চলতে দিচ্ছেন না পরিবহন শ্রমিকরা।

তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলা অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক জোট (রেজি নং: ২০৯৭)-এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা, ‘প্রহসনের নির্বাচন’ ও ‘বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায়’ ঘোষিত কমিটি বাতিল করা ও মনোনয়ন ফি বাবত আদায়কৃত সকল টাকা ফেরত প্রদান, সিলেটের আঞ্চলিক শ্রম দফতরের উপপরিচালককে প্রত্যাহার, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং: বি-১৪১৮) নেতৃবৃন্দের উপর দায়েরকৃত মামলাসমূহ প্রত্যাহার, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, মেয়াদ উত্তীর্ণ শেরপুর, শেওলা, লামাকাজী, শাহপরাণ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ এবং চৌহাট্টাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে কার, মাইক্রোবাস, লেগুনা, সিএনজি অটোরিকশসহ সকল প্রকার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা করা।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি