রায়হান হত্যার বিচার হবে, আকবর ধরা পড়বে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক ;
  • প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২০, ৩:০৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

রায়হান হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন পররষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।   প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াকেও আটক করা হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি।  বলেছেন, আকবর বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনা হবে।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১টায়  নগরীর আখালিয়ায় সিলেটের পুলিশ ফাঁড়িতে নিহত রায়হান আহমদের বাড়িতে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।  প্রায় ঘন্টা খানেক সেখানে অবস্থান করেন।  এসময়  নিহত রায়হানের মা ও স্ত্রীকে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতের আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমার আলাপ হয়েছে। পুলিশও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইছে।

কথা দিচ্চি আপনার ছেলে হত্যার বিচার হবে।”

মন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস আকবর এখনও দেশের বাইরে যায়নি। কারণ সীমান্তগুলোকে আমরা সাথেসাথে সতর্ক করে দিয়েছি। তবে আকবর বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।  সিলেটে শিশু রাজন হত্যার আসামি কামরুলের উদাহরণ  টেনে মন্ত্রী বলেন, সে বিদেশে পালিয়ে গিয়েও বাচতে পারেনি। সৌদি আরব থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো। আকবর যদি কোন দেশে পালিয়ে যায় তাকেও ফিরিয়ে আনা হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে রায়গানের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনা দেন সিলেট-১ আসনের এই সাংসদ। এসময় রায়হান হত্যার ন্যায়বিচারেরও আশ্বাস দেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন, ড. মোমেন।

এসআই আকবরকে পুলিশের জন্য লজ্জ্বা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এরকম দুএকজন কুলাঙ্গারের কারণে পুলিশ বাহিনীও লজ্জ্বিত। পুলিশের কেউ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না। সুৃষ্ঠ তদন্ত চলছে।

গত ১০ অক্টোবর বিকেলে রায়হানকে ধরে নিয়ে আসে বন্দরবাজার থানা পুলিশ। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে রায়হানের ফোন পায় তার পরিবার। তাতে ফাঁড়ি থেকে তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান।

পরিবারের কাউকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করেন রায়হান। ভোরে তারা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে।

পরে সকাল ১০টার দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছেন। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলো উপড়ানো ছিল।

পুলিশ দাবি করে, রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলার পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আকষ্মিক এক সফরে সিলেট আসেন। বেলা সাড়ে ১২টার ফ্লাইটে তিনি সিলেট এসেই আখালিয়াস্থ রায়হানের বাড়িতে চলে যান। সেখানে প্রায় ঘন্টা খানেক অবস্থান করে রায়হানের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।  সেখান থেকে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে সদ্য প্রয়াত সিলেটের সিনিয়র সাংবাদিক আজিজ আহমদ সেলিমের কবর জিয়ারত করেন। বেলা আড়াইটার দিকে আরেকটি ফ্লাইটে ঢাকা ফেরেন তিনি।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি