বিশ্বব্যাপী নাগরিক নথিভুক্ত করার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ

সিলেট ডায়রি ডেস্ক ;
  • প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২০, ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

ইতিহাসে প্রথমবারের মত- বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সকল বাংলাদেশি নাগরিককে সরকারি নথিভুক্ত করার বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। বিশেষ এই প্রকল্প পরিচালকের আশ্বাস, এবার জনশুমারি প্রকল্পে থাকবে অত্যাধুনিক তদারকির ব্যবস্থা। এদিকে কাগজ কলমে গণনার দিন ইতি ঘটিয়ে ডিজিটাল নথিভুক্তির কথা উল্লেখ করে, প্রকল্প ব্যয়, নির্ধারিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও সঠিক ফলাফল নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। আর সরকারের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে পরিসংখ্যানবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন, উন্নয়ন পরিকল্পনার স্বার্থই শুধু নয়, এই প্রকল্পের সফলতা এসডিজি অর্জনেও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে ব্যাপক সাফল্য অর্জনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করবে।

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৪০ লাখ। কিন্তু ১০ বছরের গড় বৃদ্ধি পর্যালোচনায় সরকার মনে করে তা এখন ১৬ কোটি। তবে পত্রপত্রিকা আর রাজনৈতিক আলাপনে বরাবরই অনুপস্থিত প্রকৃত সংখ্যা, কখনো ১৭, ১৮ কিংবা বলা হয় ২০ কোটিও।

১৯৭৪ সালে শুরুর পর এখন পর্যন্ত মোট ৫ বার আদমশুমারি করা হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু প্রতিবারই এই গণনার বাইরে থেকে গেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা, প্রকৃত জনসংখ্যা নিয়েও থেকে গেছে এক ধরনের বিতর্ক। ৬ষ্ঠ জনশুমারি প্রকল্পে এবার সে বিতর্কের অবসান চায় সরকার। বহু প্রথমের শুমারিতে, মূল গণনার আগেই করা হবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা, অংশ নেয়া যাবে অ্যাপসের মাধ্যমেও।

জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের পরিচালক জাহিদুল হক সরদার বলেন, কেউ যদি ফাঁকিবাজি করার চেষ্টা করে তবে সেটা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আমরা ধরতে পারবো। এবারই প্রথম বিদেশে যে বাংলাদেশিরা আছেন, তাদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হবে। পাশাপাশি বিদেশি যারা আমাদের দেশে থাকেন, তাদেরকেও গণনায় আনা হবে। মোট কথায় একটি পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজড ডাটাবেজের মাধ্যমে জনশুমারি প্রকল্প পেতে যাচ্ছে আধুনিক রূপ।

প্রায় ১৮শ কোটি টাকার এই প্রকল্প। আর তাই অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা আর গণনার ফলাফলে কোন বিতর্ক চায় না সরকার, এমনটাই জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সাপেক্ষে বিশ্বাসযোগ্য পরিসংখ্যানের উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, সুপারভিশন থেকে শুরু করে যিনি ডাটা সংগ্রহ করবেন সেই পর্যন্ত আমি মনে করি দক্ষ জনবল থাকা দরকার। কারণ এরমধ্য দিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নও চলে আসবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমার তো মনে হয় আগামী ১০ বছর পর আমাদের আর শুমারি করার দরকারই হবে না। হয়তো এটাই আমাদের শেষ জনগণনা।

২০১৯ এর অক্টোবরে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২৪ পর্যন্ত। যেখানে মূল গণনা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে ২০২১ সালের ২ থেকে ৮ জানুয়ারি, ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা চলবে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি