নদীগর্ভে বিলীন জৈন্তার তিন গ্রামবাসীর স্বপ্ন

নাজমুল ইসলাম, জৈন্তাপুর;
  • প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২১, ১১:১৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৩ বছর আগে

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যতম বড় নয়াগাং নদীর ভাঙ্গনে কাটাখাল গ্রামের দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই রাস্তাটির বাকী অংশ নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। যার কারনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখাযায়, জৈন্তাপুর উপজেলার সংসদ সদস্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের নিজ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত কাটাখাল গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটির প্রায় দেড় কিলোমিটার জায়গা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

বর্ষা মৌসুমের শুরুতে কাটাখাল গ্রামের রাস্তারটি গিলে খাবে বড় নয়াগাং নদী। রাস্তা বিহীন হয়ে পড়বে ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্ধাদের একাংশ। নদী ভাঙ্গন চলতে থাকলে আগামী ২বৎসরের মধ্যে কাটাখাল, লামনীগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণপাড়ের একাংশ, মেয়াখাই, খারুবিল গ্রামের একাংশ নদী গর্ভে বিলীন হবে। গ্রাম গুলোর অধিকাংশ পরিবার নিজস্ব বসত ভিটা হারিয়ে ভূমি হীন হয়ে পড়বে।

কাটাখাল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন, এখলাছুর রহমান, জাকারিয়া আহমদ, ফয়সল আহমদ, ফখর উদ্দিন, আনিসুল হক, নাজিম উদ্দিন, ইউপি সদস্য ইসমাঈল আলী, সাবেক ইউপি সদস্য সুলেমান আহমদ সহ ৪টি গ্রামের শতাধিক বাসিন্ধারা জানান, বিগত ২বৎসর পূর্বে পার্শ্ববর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার সারী নদীর অন্যতম শাখা নদী হিদাইর খাল নামক নদীটি অপরিকল্পিত ভাবে বাঁধ নির্মাণ করার কারনে নয়াগাং নদী, সবুড়ী নদী, বড় নয়াগাং নদী, রাংপানি নদী, ১নং লক্ষীপুর নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

ইতোপূর্বে কোথায় কোন রকম ভাঙ্গন দেখা দেয়নি। তারা আরও জানান, হিদাইর খাল নদীতে বাঁধ দেওয়ার পর হতে জৈন্তাপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রতিটি নদীতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বড় নয়াগাং নদী, নয়াগাং নদী, সবুড়ী নদীর ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারন করছে। নদী ভাঙ্গনের স্বীকার হচ্ছে নদীর তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্ধারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে হিদাইর খাল নদীর বাঁধ অপসারণ না করা হলে অচিরেই নদী গর্ভে বিলিন হবে উল্লেখিত গ্রামের বাসিন্ধারা। বসবাসকারীদের মধ্যে অনেকেই নদী গর্ভে বসতবাড়ী হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়বে। নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কাটাখাল, লামনীগ্রাম দক্ষিণপাড়, মোয়াখাই গ্রামের বাসিন্ধারা। গ্রামবাসীর দাবী মানানীয় মন্ত্রী মহোদয় সরজমিনে নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করে দ্রুত নদীর পাড় রক্ষার উদ্যোগ গ্রহন করবেন।

জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এখলাছুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত ভাবে উপজেলা পরিষদকে ও মন্ত্রী মহোদয়কে অবহিত করেছি। আমি আশা রাখি দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহমদ জানান, বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমাকে জানানোর পর সরজমিন পরিদর্শন করে দেখেছি। নদীর ভাঙ্গন যে ভাবে দেখা দিয়েছে তা প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার, মন্ত্রী মহোদয়কে লিখিত ভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি