ধলই চা-বাগান খুলে দেয়া ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রতিনিধি, কমলগঞ্জ ;
  • প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২০, ১২:৫৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

টানা ২৮ দিন ধরে বন্ধ থাকা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলই চা-বাগান খুলে দেওয়া ও চেয়ারম্যানসহ চা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন চা শ্রমিকরা।

আজ সোমবার (২৪ আগস্ট) সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দীর্ঘ ১৪ কিলোমিটার পথ বিক্ষোভ মিছিল করে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ধলই চা-বাগানের ৫ শতাধিক চা শ্রমিক উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় প্রাঙ্গণে যান।

জানা গেছে, সকাল ১১টায় চা-বাগানের নারীনেত্রী গীতা রানী কানু, ছাত্রনেতা সজল কৈরী, রাম সিং, সুমন রাজভর ও প্রদীপ পালের নেতৃত্বে ৫ শতাধিক চা শ্রমিক ব্যানার-ফেস্টুন সহকারে বিক্ষোভ মিছিল করে পায়ে হেঁটে কমলগঞ্জ উপজেলা সদরে যান। এ খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার পুলিশের একটি দল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে লাঠিসোঁটা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেয়।

নারীনেত্রী গীতা রানী কানুসহ শ্রমিকরা জানান, গত ২৭ জুলাই ধলই চা-বাগানের মালিকপক্ষ বেআইনি ঘোষণায় চা-বাগান বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এ নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে কয়েক দফা বৈঠক হলেও চা-বাগান খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই স্থানীয় সাংসদ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে ধলই চা-বাগানে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৯ জুলাই ধলই চা-বাগান খুলে দেওয়া হবে এবং পরবর্তী বৈঠকে চা-বাগানের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামের ব্যাপারে ও বাগান বন্ধ থাকাকালীন চা শ্রমিকদের মজুরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও ওই রাতেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম চা-বাগানে প্রবেশ করেছিলেন। এ নিয়ে চা শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে গত বুধবার (১৯ আগস্ট) ধলই চা-বাগান কোম্পানির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খালেদ মঞ্জুর খান ধলই চা-বাগানে প্রবেশকালে শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দুইজন নারী চা শ্রমিক লাঞ্ছিত হলে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এ সময় সহকারী মহাব্যবস্থাপকের গাড়ির কাঁচ ভাঙেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ ঘটনায় ধলই চা-বাগান কোম্পানির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খালেদ মঞ্জুর খান বাদী হয়ে গত শনিবার (২২ আগস্ট) মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানুসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

ধলই চা-বাগান খুলে দেওয়া ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার সকালে ১৪ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে এসে উপজেলা প্রশাসন এলাকায় অবস্থান নিয়ে ৫ শতাধিক চা শ্রমিক বিক্ষোভ করেন।

গীতা রানী কানু জানান, প্রয়োজনে সারারাত কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা প্রতিবাদ জানাবেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘ধলই চা-বাগানের শ্রমিকদের একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল এসে উপজেলা প্রশাসন এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। উপজেলা সদরে যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য পুলিশ সদস্যদের সতর্ক রাখা হয়েছে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান জানান, তিনি এলাকার বাইরে আছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি