কিছুতেই দূর্ভোগ কমছে না বানভাসি মানুষের, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

মিঠু দাস জয়;
  • প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২২, ৪:২৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

সিলেটে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নগরবাসীর দুর্ভোগও বেড়েছে। কিছুতেই কমছে না বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। বাড়ছে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা। পানি নেমে যাওয়া এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। আশপাশে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনাও বাসাবাড়িতে প্রবেশ করেছে। তাই পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই বাড়িঘর ও আশপাশ পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছে মানুষ।

কয়েক দিন আগেও সিলেট নগরীর উপশহর এলাকার প্রধান সড়কে ছিল কোমর পর্যন্ত পানি। এই সড়কে দিব্যি নৌকাও চলানো হয়েছে। দুই দিন আগেও এই সড়কে বেশ পানি ছিল। তবে এখন পানি নেমে ভেসে উঠেছে চেনা সড়ক। গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের উপশহরের প্রধান সড়কে গিয়ে দেখা যায় একেবারে পানিহীন সড়ক। এই আবাসিক এলাকার গলির ভেতরের অন্যান্য সড়ক থেকেও নেমে গেছে পানি।

এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত সিলেটে ৩৬৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন।

নগরীর তালতলা এলাকায় গিয়েও দেখা যায় পুরো পানিশূন্য সড়ক। এসব এলাকার বাসাবাড়ি থেকেও পানি নেমে গেছে। দু-একটি নিচু এলাকা ছাড়া নগরীর বেশির ভাগ এলাকা থেকেই নেমে গেছে পানি।

এদিকে ১৩ দিন পর সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। আজ সকাল থেকে সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি কমলেও কানাইঘাট পয়েন্টে এখনো পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি এখনো সব কটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। এতে নগরীর পানি দ্রুত কমলেও গ্রামাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। জেলার ১২টি উপজেলায় এখনো পানিবন্দী অবস্থায় আছে কয়েক লাখ মানুষ।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি সকাল ৬টায় ছিল ১০ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় পানি ছিল ১০ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার পরিমাপ হচ্ছে ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সকাল ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ছিল ১৩ দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে দুপুর ১২টায় পানি ছিল ১৩ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমার পরিমাপ হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।

এর আগে গত ১১ মে থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তলিয়ে যেতে শুরু করে সিলেটের বেশির ভাগ উপজেলা। গত ১৬ মে থেকে তলিয়ে যেতে থাকে সিলেট নগরীর নদীতীর ও আশপাশের বেশির ভাগ এলাকা। এর আট দিন পর নগর থেকে নামল পানি।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। এখন দু-একটি এলাকা বাদে সব জায়গা থেকেই পানি নেমে গেছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার দল গঠন করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো এবং ময়লা দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপসহকারী প্রকৌশলী নিলয় পাশা বলেন, বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। পানি দ্রুত নেমে যেতে শুরু করেছে। পানি নামার এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে দ্রুতই পুরো জেলার বন্যা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি