৫৪ ধারার দায় থেকে মুক্তি পেলেন ২১৯ প্রবাসী

সিলেট ডায়রি ডেস্ক;
  • প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২০, ১০:৪৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৫ বছর আগে

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘এই রায়টি বাস্তবায়নের দিকে নজর দেয়া উচিত। সবাই যাতে রায়টি অনুসরণ করেন, আমরা সেভাবেই পর্যবেক্ষণ দেব।’ করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরত ২১৯ প্রবাসীকে সিআরপিসির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি হয। আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ফুয়াদ হাসান। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সারওয়ার হোসেন বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সম্প্রতি ভিয়েতনাম, কাতার, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত পাঠানো ২১৯ বাংলাদেশিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় চলমান কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত (সিএমএম)। এছাড়া এখন থেকে আর তাদের হাজিরা দিতে হবে না বলেও জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, করোনাকালে মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে কুয়েত, বাহরাইন ও কাতার থেকে ফেরত ২১৯ জন প্রবাসীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কোয়ারেন্টাইন শেষে কী কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় হাইকোর্টে মামলা করেন কারাগারে থাকা বেশ কয়েকজন প্রবাসী।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৫৪ ধারার মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন। একইসঙ্গে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকার সিএমএমএমের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হাজির হন তুরাগ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিউল্লাহ। আদালতে দাখিল করা তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদেরকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা বিদেশে গিয়ে কোন কোন অপরাধ সংঘটনের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ ৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত দণ্ডিত। অপরদিকে, সিএমএমএমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

শুনানিতে প্রবাসীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যের্তিময় বড়ুয়া বলেন, প্রবাসীদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপনের সময় তদন্ত কর্মকর্তা কোনো কেস ডায়েরি উপস্থাপন করেননি। কিন্তু আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কেস ডায়েরি মেনটেন করতে হবে। আর কেস ডায়েরি না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেট অঙ্গীকারনামা নিয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেবেন।

‘কেস ডায়েরি না দেয়ায় দণ্ডবিধির ২২০ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। আর ৫৪ ধারায় কাউকে ১৫ দিনের বেশি আটক রাখারও সুযোগ নাই। কিন্তু দেখা যা দেখছি আপিল বিভাগের রায়ের নির্দেশনা কেউ বাস্তবায়ন করছে না। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের রায়ই আইন। সেটা সবাই মানতে বাধ্য।’

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, করোনাকালে ২১৯ জন প্রবাসীর তথ্য বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেটা আমরা দেখেছি। আর ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটির কার্যক্রম শেষ করেছেন। এ কারণে মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেয়া হলো।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি