সব
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় ও সরকারী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিলেটের ওসমানীনগরে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। ‘হায় হাসান-হায় হুসেন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছে ওসমানীনগরের পাক পাঞ্জাতনের মাজারগুলো। শানে পাঞ্জাতনগুলোতে কারবালার করুন মাতমে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার আকাশ-বাতাস।
শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ নারী-পুরুষ সবাই একত্রে মাতম করছেন পাক-পাঞ্জাতনের শানে। করোনা ভাইরাসের কারণে এবছর তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত না হলেও এলাকার পাঞ্জাতনের মাজার গুলোতে পবিত্র আশুরার জারী ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রোববার পালন করা হয়েছে পবিত্র আশুরা। কোরআনে খতম, আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল, রোজা পালন, গরিবদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করছেন এলাকার মুসল্লিগন।
এদিকে, আশুরা উপলক্ষে রবিবার উমরপুর ইউনিয়নের বড় ইসবপুর পীর বাড়ী ও নিজ করনসী পূর্বপাড়া পাঞ্জাতনের মাজার পরিদর্শন করেছেন উমরপুর ইউনিয়ন চেয়রাম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মো:গোলাম কিবরিয়া। এসময় তিনি সবাইকে সরকারী স্বাস্থবিধি মেনে আশুরা পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, কারবালার শোকাবহ এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপ‚র্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক এ দিনটি। হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেইন (রা.) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।
কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জাগায়। এসময় নিরাপদ দুরত্ব এবং মাস্ক পড়ে পবিত্র আশুরার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুরুধ জানান তিনি।
অন্যদিকে, পবিত্র আশুরা অনুষ্ঠান উপলক্ষে মসজিদ মাজারে আলোচনা সভা, জিকির ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের পীর ওয়াছিদ আলীর বাড়ী পাঞ্জাতনের মাজার, ওলাতৈল পাক পাঞ্জতনের মাজার, মোতিয়ারগাঁও পাঞ্জাতনের মাজার, নিজ করনসী পূর্বপাড়া পাঞ্জাতনের মাজার, উমরপুর ইউনিয়নের বড় ইসবপুর পীর বাড়ী, সাদিপুর ইউনিয়নের গজিয়া ও ইব্রাহিমপুরের পাঞ্জতনের মাজারেও ওই ১০দিন দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছিল মাতম, জারি, সঙ্গে রোজা ও নফল নামাজ, ইবাদত বন্দেগি ও শিরনী বিতরণ।
রবিবার ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ করে বুক চাপড়ে শোকের মিছিলের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় আনুষ্ঠানিকতার। শুধু মুসলমানই নয়, অন্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসুক জনতা উপস্থিতিও ছিল লক্ষ্যনীয়। হাতে লাল সবুজ আর সাদা রংয়ের পতাকা নিয়ে হাজার হাজার লোকের মিছিলে প্রতীকী কারবালাকে ঘিরে ছিল লোকারাণ্য।
উপজেলার পাঞ্জাতনের মাজারগুলোতে চলে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, তলোয়ার সহ বিভিন্ন ধরনের খেলা ধুলা‚লার মাধ্যমে শোকের বহিপ্রকাশ করতে দেখা যায়। ছিল আইন শৃঙ্গলা বাহীনীর কঠোর নিরাপত্তা বেষ্ঠনীর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাক-পাঞ্জাতনের মাজার এলাকা পরিদর্শনও ছিল লক্ষনীয়।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি