সব
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া কোনো হাসপাতালে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা অভিযান চালাতে পারবে না, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভালো সিদ্ধান্ত। এর ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি অরাজক অবস্থার হাত থেকে মুক্তি পেল।’ বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে প্রতিদিনের আলাপচারিতায় অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং জরুরি সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ হাসপাতালগুলোতে যা হচ্ছিল, এর ফলে একটা কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমাদের বেসরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল।’ প্রবীণ এই চিকিৎসক বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বেসরকারি খাতের অবদানই বেশি। ৬০ ভাগ মানুষ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়। কাজেই কথায় কথায় এই হাসপাতালগুলোতে অভিযান পরিচালনা করলে একটা আতঙ্ক তৈরি হতো। এর ফলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর পক্ষে যেমন জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়তো, তেমনি জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিত। আমরা মনে করি যে, হাসপাতালগুলোতে সমস্যা থাকতেই পারে। সেই সমস্যা দেখার দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।’
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করেছি অনেক হাসপাতালই দীর্ঘদিন আগে অনুমোদনের জন্য বা তাদের রেজিস্ট্রেশন নবায়ণের জন্য আবেদন করেছে, কিন্তু দিনের পর দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও সেই আবেদনের নিষ্পত্তি হয়নি। এটা কখনও কাম্য হতে পারে না।’ তিনি বলেন যে, ‘প্রথিতযশা হাসপাতালও আবেদন করেছে। এই আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালের যেই নীতিমালা আছে, সেই নীতিমালাকে যুগোপযোগী করা দরকার।’
ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সবাই তো সাহেদ না, সব হাসপাতালও রিজেন্ট হাসপাতাল নয়, কাজেই ঢালাওভাবে সবগুলো হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করায় একটা ভুল বার্তা যাচ্ছিল। এই বার্তাটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য নেতিবাচক হতো। আমি মনে করি যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ এবং সচেতন হতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অনুমতি বা এগুলোর মান যাচাই বাছাই করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের তদারকি জোরদার করতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও আমার বিনীত অনুরোধ, যে হাসপাতালগুলোতে এখনও দোষ-ত্রুটি অনিয়ম আছে, সেগুলো যেন তারা যথাশীঘ্র সম্ভব শুধরে নেয়। জনগণ যেন এই হাসপাতালগুলোতে অযথা হয়রানির স্বীকার না হয়, সেজন্য হাসপাতালগুলো আরও সজাগ হবে, সচেতন হবে, এটাই আমি প্রত্যাশা করি।’
প্রধানমন্ত্রীর এই মুখ্য চিকিৎসক বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে তদারকি এবং মনিটরিংয়ের দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে মনে রাখতে হবে যে, বেসরকারি হাসপাতালগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। কেউ কারও প্রতিপক্ষ না হয়ে পারস্পারিক সমন্বয় সাধনের ভিত্তিতে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এটা করাটাই অত্যন্ত প্রত্যাশিত এবং কাম্য। ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘কথায় কথায় যদি বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হাসপাতালগুলোতে অভিযান চালায়, তাহলে স্বাস্থ্যসেবার সার্বিক পরিবেশ ব্যহত হতে পারে। আমি এ নিয়ে আগেও বলেছিলাম এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ রকম একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ সূত্র: বাংলা ইনসাইডার
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি