সব
পর্যটকরা সারা বছর আসতে চান, ঘুরতে চান জলকন্যা ও চায়ের দেশ খ্যাত শ্রীমঙ্গলে। হরতাল অবরোধের কারণে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের পর্যটনশিল্পে খরা পড়েছে। পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো। চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এ খাতে বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অবরোধ কর্মসূচির প্রভাবে মৌলভীবাজারে পর্যটকদের দেখা মিলছে না। পর্যটক না আসায় এ খাতের ব্যবসায়ীরা হতাশ।
অন্যান্য বছর শীত মৌসুমের শুরুতে শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টে দেশি-বিদেশি প্রচুর পর্যটক থাকলেও সরজমিনে ১০ নভেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা যায়, সকল পর্যটন স্পটগুলো প্রায় পর্যটকশুন্য। গত বছর নভেম্বর মাসে এ জেলায় পর্যটকের ভিড় থাকলেও এ বছর গত অক্টোবর মাস হরতাল ডাকার পর থেকে পর্যটকের আগমন কমতে শুরু করেছে। চলতি নভেম্বর মাসে দ্বিতীয় দফা অবরোধের প্রভাবে জেলার জলপ্রপাত, মাধবপুর লেক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হামহাম ঝরনা এবং চা বাগানসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে একেবারেই পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। গেল সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার অবরোধ না থাকলেও কোনো পর্যটকের দেখা মিলেনি চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে। এদিকে পর্যটক না আসায় এ খাতের ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় রয়েছেন। শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন হোটেল-কটেজ ও রেস্ট হাউসগুলোতে কোনো বুকিং নাই। অলস সময় পার করছেন হোটেল-রিসোর্ট কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। পর্যটক না আসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের। বুকিং ছিল না হোটেল মোটেলের ৯৫ শতাংশ কক্ষ।
শ্রীমঙ্গলের পর্যটন ইকো গাইড শ্যামল দেব বর্মা বলেন, বিগত বছরগুলোয় এ সময়টাতে শ্রীমঙ্গলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। হোটেল-মোটেলে কোনো সিট ফাঁকা থাকে না। বিশেষ করে প্রতি বছর এ সময় দেশ-বিদেশের নানা বয়সী পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত থাকে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্পট। কিন্তু টানা অবরোধ-হরতালের কারণে এবছর শীত মৌসুমের শুরুতে এসব স্পটে এখন পর্যটকদের দেখা মিলছে না। শ্রীমঙ্গল ভ্রমণের জন্য যারা আগাম বুকিং দিয়েছিলেন তাও তারা বাতিল করেছেন। এতে ট্যুর অপারেটর ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বছরের এই সময় থেকেই চায়ের রাজ্যে ভিড় করতে শুরু করেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। কিন্তু হরতাল ও অবরোধের কারণে সব বুকিং বাতিল করেছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসার পথে গণপরিবহন না পাওয়া ও রাস্তাঘাটে সংঘাত, সংঘষের কথা চিন্তা করে কেউ বের হচ্ছেন না।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমেদ বলেন, দুর্গাপূজার শুরু থেকেই শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প বেশ জমে ওঠেছিল। কিন্তু হরতাল অবরোধের কারণে চলতি বছরের শুরুতেই আমরা বিশাল আর্থিক লোকসানের মুখোমুখি হলাম। হরতাল অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলমান থাকলে আমরা কর্মীদের ছাঁটাই করতে হবে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ট্যুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বে থাকা ট্যুরিস্ট পুলিশ মৌলভীবাজার জোনের পুলিশ উপপরিদর্শক প্রবাল সিনহা বলেন, চায়ের রাজ্য শ্রীমঙ্গলে গত দুই সপ্তাহ ধরে তেমন কোনো পর্যটকের সমাগম ছিল না। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রস্তুত রয়েছে শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশ।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি