সব
কোনো ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপাকে পড়তো দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দারা। উপজেলায় কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় বড় ধরনের অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কিংবা উদ্ধার কাজে সহযোগিতা নিতে হতো পার্শ্ববর্তী ছাতক উপজেলা এবং জেলা শহর সুনামগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের। এই দুই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহযোগিতা-ই ছিলো কেবলমাত্র শেষ ভরশা।
কিন্তু পুরো উপজেলা ভৌগলিক ভাবে সুরমা নদীসহ ছোট্ট বড় বিভিন্ন পাহাড়ী নদী দ্বারা বিভক্ত হওয়ায় অধিক দূরত্ব ও নাজুক যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে বাইরের ফায়ার সার্ভিসের সেবা পাওয়ার আগেই বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো ভুক্তভোগীদের। যেকারণে সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বসতবাড়ি, আবাসিক ভবন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠান সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকতো।
এ পর্যন্ত অগ্নিদুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই।
উপজেলায় কোনো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় একটি নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সেবা প্রাপ্তি ছিলো উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান মানিকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন এখন বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের ২৫ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন এমপি মানিক।
দুই বছরের মাথায় উপজেলাবাসীর স্বপ্নের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণ কাজ এখন শেষ। এখন কেবল উদ্বোধনের পালা। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পেয়ে এখন খুশি সর্বস্তরের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের পশ্চিম পাশে দৃশ্যমান দৃষ্টিনন্দন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এখন নজর কাড়ছে পথচারীদের। এক নজর দেখতে প্রতিদিনই এখানে ভীড় জমছে কৌতূহলী মানুষের। এটির উদ্বোধন হলে সেবা পাবে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ জানায়, নবনির্মিত দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ কাজে বরাদ্দ ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগ কাজ বাস্তবায়ন করেছে। কার্যক্রম শুরু হয়েগেলে এখান থেকে অন্যান্য স্টেশনের মতো অগ্নিনির্বাপণ সেবা ছাড়াও বিভিন্ন উদ্ধার কাজের সেবা পাওয়া যাবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বীরপ্রতীক বলেন, ‘আমাদের এই দুর্গম উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এতোদিন যাবৎ স্বপ্ন ছিলো। স্বাধীনতার পর দেশে অনেক সরকার ক্ষমতায় এসেছে, আমাদের এই সংসদীয় আসন থেকে অনেক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনের জনবান্ধব সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের মতোন এভাবে কেউ আমাদের উন্নয়নের কথা ভাবেনি। উনাদেরকে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। জীবিত থাকা অবস্থায় স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু কন্যার বদৌলতে নিজের এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন দেখতে পেরেছি। এটাই আমাদের বড় তৃপ্তি ও প্রাপ্তি।’
উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় এই প্রথম একটি নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মিত হয়েছে। এটা উপজেলাবাসীর জন্য অনেক বড় ধরনের প্রাপ্তি। এভাবেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক। এখানে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের দাবি জানাই।’
সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম ভূঞা বলেন,দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হ্যান্ড ওভার করলেই কার্যক্রম শুরু হবে। এই স্টেশনের অনুকূলে গাড়ি আছে। কিন্তু জনবল নেই, তবে সংযুক্তি জনবল নিয়ে আমরা কার্যক্রম শুরু করব। এছাড়া অন্যান্য সরঞ্জামাদি আছে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি