সব
পণ্য সেবা আর আধুনিকায়ন নিয়ে দেশের কুরিয়ার সার্ভিস কম্পানি গুলো যখন বড় বিজ্ঞপ্তি আর বিজ্ঞাপণ দেয় যা দেখে মানুষ নিজেদের মূল্যবান মালামাল তুলে দেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য নামি বেনামী কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু গ্রাহকদের সেই বিশ্বাস আর ভরসা নিয়ে রীতিমতো প্রতারণা করে সেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। মালামাল অনুযায়ী অধিক ভাড়া ঠিকমতো ডেলিভারি না হওয়া মালপত্র হারিয়ে যাওয়া সহ বিস্তর অভিযোগ দেশের অসংখ্য কুরিয়ার সার্ভিস কম্পানির উপর।
সেই অভিযোগে শ্রীমঙ্গলে যুক্ত হলো দেশের শীর্ষস্থানীয় পন্য পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে। সেবার নামে মালামাল চুরির অভিযোগ উঠছে শ্রীমঙ্গল শাখার এই কম্পানিটির বিরুদ্ধে । স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, শ্রীমঙ্গল সুন্দরবন কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসে বুকিং দেয়া মালামাল প্রাপকের কাছে পৌঁছার আগেই প্যাকেট খুলে পন্য চুরি যাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় কর্মরত নারী উদ্যোক্তা শিউলী আক্তার জানান, অনলাইনের অর্ডার নিয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে চা, মণিপুরী শাড়ি সুন্দরবন কুরিয়ারে আমরা পাঠিয়ে দেই। সেই পণ্য গ্রাহক হাতে পেয়ে প্যাকেট কাটা ও ভিতরে পণ্য কম বা অন্য পণ্য দেয়া দেয়ার অভিযোগ করছেন প্রাপক। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানান শিউলী আক্তার।
একই উপজেলার এসিআই কোম্পানির আনিসুর রহমানের। সম্প্রতি ঢাকা থেকে মালামাল এনে দেখেন প্যাকেটে পণ্য নাই। পৌর শহরের চা পাতা ব্যবসায়ী সুমন বলেন, সম্প্রতি গ্রাহকের বরাবরে পাঠানো চা পাতার বস্তার সেলাই কেটে চা পাতা চুরি হয়। এনিয়ে অভিযোগ করা হলেও প্রতিষ্ঠান থেকে কোন সুরহা মেলেনি। পুরানবাজার এলাকার পাবনা ক্লথ ষ্টোরের কামাল পাশা অভিযোগ করেন, এক গাট্টি জাকাতের কাপড় বুক দেন দেশের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উদ্দ্যেশ্যে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও পন্য গন্তব্যে না পৌছার পর এই কুরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানান ঢাকার গুদাম থেকে এটা চুরি হয়েছে। জানা গেছে শুধু গ্রাহকের পণ্য চুরি নয়, যে কোন পার্সেল বা ডকুমেন্ট পাঠাতে প্রতিষ্ঠানটি অভিনব কায়দায় গ্রাহকের পকেট কাটছে।
রুহুল আমিন নামে এক চাকুরিজীবির অভিযোগ, ১৫ টাকার ডকুমেন্ট চার্জ ১শ’ টাকা আদায় করছে। দেড় কেজি চা পাতা ঢাকায় পাঠাতে কার্টুন প্রতারনার নামে দেড়শ’ টাকা নিচ্ছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হোম ডেলিভারী নিয়েও পন্য আটকে রাখার অভিযোগ করেন শহরের ব্যবসায়ী শেখ সারোয়ার জাহান।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সুন্দরবন কুরিয়ারের প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বড় কোম্পানী হওয়ার কারণে সুন্দরবন কুরিয়ারে অনেক শিক্ষিক অর্ধ শিক্ষিত মানুষ কাজ করে। যে কারণে এধরনের ঘটনা ঘটছে। সুনিদৃষ্ট ভাবে কেউ অভিযোগ করলে কোম্পানী ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান। ১-২ টাকার পলিথিন কেন ১শ’ ২শ’ টাকা নেয়া হচ্ছে তা জানতে চাইলে কুরিয়ারের শ্রীমঙ্গল শাখার কর্মকর্তা আতিক জানান, ডকুমেন্ট এর নিরাপত্তার জন্য এই টাকা নেয়া হয়। শিউলি আক্তারের অভিযোগ বিষয়ে, ঈদের পর দেখবেন বলে জানান।
এব্যাপারে মৌলভীবাজার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, এসব বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি