সব
রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদের মতো সিলেটেও আরেক ভয়ানক প্রতারক ‘নব্য সাহেদ’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক কাজী অপু মিয়া (৩৫) ফেঞ্চুগঞ্জের কাজিবাড়ি গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র।
আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা পুলিশের প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
এসপি জানান, আরব আমিরাত প্রবাসী শেখ মোরশেদ আহমদ (৩৩) এর সাথে প্রতারণা করে কাজী অপু, তার ভাই কাজী টিপু ও তার সহযোগীরা ২৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ কাজী অপুকে গ্রেপ্তার করে। তাকে গ্রেপ্তারের পর তার প্রতারণার আসল রহস্য বেরিয়ে আসে।
প্রতারক কাজী অপু ও তার ভাই কাজী টিপুর বিরুদ্ধে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার মামলা নং-০৫। তারিখ ২/০৯/২০২০খ্রি: ধারা-ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮এর ২৩(১)/২৪(১)(ক) তৎসহ দন্ডবি ৬/৪২০/৪৬৮/৪৭১/৩৪ রুজু করা হয়েছে।
জানা যায, শেখ মোরশেদ গত ১৯ ফেব্র“য়ারি দেশে আসেন। দেশে আসার পর গ্রেফতারকৃত কাজী অপু মিয়া ও তার আপন ভাই কাজী টিপুর সাথে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে কাজী অপু ও টিপু প্রবাসী শেখ মোরশেদ আহমদকে গাড়ি ক্রয়ের প্রলোভন দেখায়। তিনি সরল বিশ্বাসে গত জুন মাসে কাজী অপু ও কাজী টিপুর মাধ্যমে বিভিন্ন লোকজনের নিকট থেকে ১৯ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ৩টি নোহা গাড়ী ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত গাড়িগুলোর কাগজপত্র হালনাগাল না থাকায় অপু ও টিপু কাগজপত্র হালনাগাদ করে দিবে বলে গত ৩০ জুন বিকাল ৫টার দিকে ৪ লক্ষ টাকা নেয়। পরবর্তীতে হালনাগাদকৃত কাগজ দিতে টালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ২৭ আগষ্ট সন্ধ্যা ৭টায় কাজী অপু মিয়া শেখ মোর্শেদের নিকট ১টি নোহা গাড়ি (যার রেজি নং-ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-৩০২১) এর বায়নামাপত্রের ফটোকপি প্রদান করেন।
ওই বায়নাপত্রের বিভিন্ন অংশে বিআরটিএ, সিলেটের সীলমোহরযুক্ত জনৈক কর্মকর্তা মোছাঃ দিলরুবা আক্তারের স্বাক্ষরসহ ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় কর্মরত এসআই শামীম এবং থানার ওসি সহ সিলেটের একাধিক ব্যক্তিবর্গের জাল স্বাক্ষর দেয়।
কাজী অপু এর নিকট থেকে পাওয়া বায়নাপত্র যাচাই বাছাই করতে গেলে সবকিছু জাল প্রমাণিত হয়। এমনকি ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় শামীম নামে কোন এসআই নেই বলেও জানা যায়।
এরপর গ্রেফতারকৃত কাজী অপু গত ২৩ আগষ্ট দুপুর ২টায় তার এক সহযোগীকে দিয়ে ০১৭১৬-৮৩৯০৮১ নাম্বার থেকে মোরশেদের ব্যবহৃত নাম্বার ০১৭১২-৪৫১১৫৬ তে ফোন নিজেকে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার পরিচয় দেয় এবং কিছুদিনের মধ্যে তার গাড়ির নাম্বার প্লেট প্রদান করা হবে জানায়।
শুধু তাই নয়- ০১৭১৬-৮৩৯০৮১ হোয়াটসঅ্যাপ খুলে এসপি ফরিদ উদ্দিন ও তার পারিবারিক ছবি প্রোফাইলে দিয়ে নিজেকে এসপি প্রমাণ করে। এছাড়াও উর্ধ্বতন অফিসারদের ছবির সাথে ইডিট করে তার ছবি লাগিয়ে প্রতারণা করারও প্রমান পেয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত অপুকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ও বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই সময় প্রেস বিফ্রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মোঃ মাহবুবুল আলম, জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া ) মোঃ লুৎফর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) শেখ মুত্তাজুল ইসলাম
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি