সাহেদের প্রতারণার জাল সুনামগঞ্জেও

সিলেট ডায়রি ডেস্ক ;
  • প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২০, ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

করোনাকালে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাহেদ করিম সুনামগঞ্জের এক বালু-পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও প্রতারণা করে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ছাতকের মন্ডলীভোগ এলাকার ব্যবসায়ী এখলাছ খান জানান, গত মে মাসে শাহেদ ও তার এক সহযোগী মাসুদ বালু-পাথর সরবরাহের কথা বলে দুই কোটি টাকার মালামাল নেন। পাওনা টাকা চাইতে ঢাকায় গেলে ওই ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখান সাহেদ। প্রতারণার শিকার সুনামগঞ্জের ছাতকের বালু-পাথর ব্যবসায়ী এখলাছ খান এ ব্যাপারে মামলা করার জন্য ছাতক থানায় যোগাযোগ করেছেন। ছাতক থানা পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়ী এখলাছের লিখিত অভিযোগে ভুল থাকায় সংশোধন করে আনার জন্য বলা হয়েছে।
জানা গেছে, জানুয়ারিতে সুনামগঞ্জের একটি সরকারি রেস্ট হাউসে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। তিনটি বিলাসবহুল গাড়ি, বাইরে বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী পাহারায় দাঁড়িয়ে ছিল। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাবার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দায়িত্বে ছিলেন।
হোস্ট নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন সাহেদ হিসেবে, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর যিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাজনৈতিক গবেষণা কমিটির সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্বরত।
ছাতকের এক ব্যবসায়ীর সাথে ব্যবসায়িক আলোচনার জন্য ডাকা বৈঠকে শাহেদ কক্সবাজারে পাথর সরবরাহ ও ঢাকার পূর্বাচল এলাকায় বালু সরবরাহের আদেশ দেন। তিনি বলেছিলেন যে তাঁর রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য তার বালু এবং পাথর ২ টি করে ৪ টি জাহাজের দরকার ছিল। ব্যবসায়ী এখলাস খান বলেন, সব ব্যবস্থা দেখে আমি অভিভূত হয়েছি এবং ২৪ জানুয়ারি ডেলিভারি করতে রাজি হয়েছি”।সাহেদ বলেছিলেন যে, বিল যা হবে মালামাল পৌছানোর পর তা পরিশোধ করবেন। মালামাল পৌছানোর পরে, তিনি এখলাসকে ৩০ লাখ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন এবং বাকি টাকা একটি ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে দিতে চেয়েছিলেন। তখন ব্যবসায়ী এখলাছ সাহেদকে একটি গাড়ির শো-রুমে ৯৪ লক্ষ টাকার একটি এলসি দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। ব্যবসায়ী এখলাস ওই শোরুমের মাধ্যমে একটি এক্সকেভেটর (খননযন্ত্র) আমদানি করিয়েছিলেন।
সাহেদ এখলাসের উপস্থিতিতে এলসির কাগজপত্র ওই শোরুমে হস্তান্তর করেন। “তবে এক মাস পরে, শোরুমের পক্ষ থেকে তারা আমাকে জানিয়েছিল যে শাহেদ এক সপ্তাহ পরে এলসির কাগজপত্র ফেরত নিয়ে নিয়েছেন” । এ ছাড়া, তিনি যখন ৩০ লাখ টাকার চেকটি ক্যাশ করতে গিয়েছিলেন, তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা নেই।
তার পর থেকে তিনি যখনই সাহেদকে ফোন করতেন, তখন তার সেক্রেটারি ফোন রিসিভ করতেন এবং অর্থ প্রদানের বিষয়ে কখনোই পরিষ্কার কিছু বলেননি। এর কিছু দিন পর সাহেদের সেক্রেটারি জানান, শাহেদ কোভিড -১৯-এ ভুগছেন। এখলাছ বলেন, অবশেষে ২৯ জুন সাহেদ আমার সাথে দেখা করলেও আমাকে তার দেহরক্ষীর কাছ থেকে একটি বন্দুক নিয়ে হুমকি দেন। তিনি বলেছিলেন যে আমি কোনও টাকা পাব না এবং আমি যদি কোনো অভিযোগ দায়ের করি তবে আমাকে মেরে ফেলবেন।
ব্যবসায়ী এখলাস সমস্ত নথিপত্রসহ এখন অপেক্ষা করছেন অভিযোগ দায়েরের। ১৫ জুলাই শাহেদ করিমকে গ্রেপ্তারের পর থেকে ব্যবসায়ী, রিকশা চালক, চাকরিপ্রার্থী, চিকিৎসক ও আইনজীবীসহ অনেকে আইন প্রয়োগকারীদের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং অভিযোগ পূরণ করছেন।

সূত্র- একাত্তরের কথা 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি