সব
মৌলভীবাজারে অবৈধ উপায়ে গাছ কাটার সময় রাস্তায় চলাচলরত চলন্ত মোটরসাইকেলে গাছ পড়ে এক সাংবাদিক নিহত হওয়ার চার দিন পেড়িয়ে গেলেও ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারি নি পুলিশ। এর আগে গত ১১ নভেম্বর জেলার সদর উপজেলার ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মোকামবাজার এলাকায় সড়কের পাশের গাছ কাটতে গিয়ে চলন্ত মোটরসাইকেলে গাছ পড়ে স্যাটেলাইট টেলিভিশন বাংলা টিভির শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি বিক্রমজিৎ বর্ধন ঘটনাস্থলেই মারা যান ও তার ছেলে জয় বর্ধন গুরুতর আহত হন। ঘটনার সাথে জড়িতরা এলাকার চিহ্নিত গাছ চুর হলেও তাদের এখনো আটক করতে পারে নি পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তারা গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার রাতে মৌলভীবাজার থানায় নিহত বিক্রমজিতের বড় ছেলে জয় বর্ধন বাদী হয়ে গিয়াস নগর ইউনিয়নের নিতেশ্বর এলাকার অকিল মিয়া (৪৫), মোয়াক্কিল মিয়া (৪৮) সহ অজ্ঞাতনামা নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ছেলে জয় বর্ধন বলেন, গত ১১ নভেম্বর সকালে ১০ মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিবার পরিকল্পনার নিয়োগ পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করি। পরীক্ষা শেষে সকাল ১১ টা ৪০ এর সময় আমার বাবার
মোটর সাইকেল যোগে শ্রীমঙ্গলে বাড়ি ফিরছিলাম দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মোকামবাজার এলাকায় এলে হঠাৎ করেই কবরস্থানের সামনের রাস্তার পাশ থেকে একটি কাটা গাছ আমাদের উপর পড়ে। সেখানে গাছ পড়ে আমার বাবা ঘটনাস্থলেই মারা যান। আমি গুরুতর আহত হই। এসময় আমার বাবার লাশ রাস্তায় পড়ে ছিলো, কেউ এগিয়ে এসে আমাদের সাহায্য করে নি। যারা গাছ কাটছিলো তারা আমাদের উপর পড়া গাছ থেকে তাদের বাধা রশি খুলে নিয়ে যাচ্ছিলো। কেউ তাদের কিচ্ছু বলে নি। শুনেছি তারা অই এলাকার অনেক প্রভাবশালী লোকের মানুষ। গাছ কাটতে গিয়ে এভাবে আমার বাবাকে তারা হত্যা করলো, আমাদের পরিবার অসহায় অবস্থায় পড়েছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গিয়াস নগর এলাকার একাধিক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার দিন সকাল থেকে প্রকাশ্যেই রাস্তার পাশের সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন অকিল মিয়া ও মোয়াক্কেল মিয়া সহ আরো কয়েকজন। তাদের সাথে এলাকার প্রভাবশালী কিছু মানুষ থাকায় ভয়ে কেউ গাছ কাটতে নিশেদ করে নি। গাছ কাটার এক পর্যায়ে কাটা গাছ রাস্তায় পড়ে যায় চলন্ত মোটরসাইকেল এর উপরে চালকের মাথায় পড়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইয়াছিনুল হক জানান, এ বিষয়ে গতকাল মামলা রেকর্ড হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে কাজ করছি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এভাবে রাস্তার গাছ চুরি করতে গিয়ে জিবন্ত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করছি।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি