সংকটের মুখে ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের প্রায় ৫২০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর শিক্ষাজীবন

;
  • প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২১, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

ইউসেপ বাংলাদেশ সিলেট অঞ্চলের এম্প্লয়ার্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে নগরের টিলাগড় এলাকাস্থ ইউসেপ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ইউটিআই) সিলেটের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ইউসেপ বাংলাদেশ সিলেট অঞ্চলের এম্প্লয়ার্স কমিটির সভাপতি আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কমিটির সদস্য সচিব ইউসেপ সিলেটের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ।

সভার সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের পরিচালক আলীমুল এহসান চৌধুরী উপস্থিত সকল এম্প্লয়েরস কে ইউসেপ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবাদের শোভন কর্মসংস্থানে সহায়তা করার আহ্বান জানান।

সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে ইউসেপ বাংলাদেশ সিলেট অঞ্চলের এম্প্লয়ার্স কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে আলিমুল এহসান চৌধুরী, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলিম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও সহসভাপতি হিসেবে স্বর্ণলতা রায় প্রেসিডেন্ট উইমেন চেম্বার অব কমার্স সিলেট নির্বাচিত হন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটির এক্স অফিসিও হিসেবে মো. আনোয়ারুল ইসলাম রিজিওনাল ম্যানেজার ইউসেপ সিলেট রিজিওন উক্ত কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে আগামী ৩ বছর কাজ করবেন ।

এম্প্লয়ার্স কমিটির সভায় কমিটির সদস্য সচিব ইউসেপ সিলেটের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল ইসলাম একের পর এক এজেন্ডা উপস্থাপন করেন আর কমিটির সভাপতি আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহসান চৌধুরী সেগুলোর বিশ্লেষণ করেন, উপস্থিত অন্যান্য ২৫ জন সদস্য সেগুলোর উপর আলোচনা করেন এবং মতামত তুলে ধরেন। সবগুলোই এজেন্ডা ছিল খুবই উৎসাহব্যঞ্জক এই যেমন, করোনাকালীন সময় বিশেষ ব্যবস্থায় ইউসেপ স্কুলের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু রাখা, প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারীদের প্রায় ৯০% শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, ইউসেপ সিলেট অঞ্চলের সবগুলো স্কুলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের চলাচল উপযোগী র‌্যাম্প নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ডওয়াশ পয়েন্ট স্থাপন ইত্যাদি।

কিন্তু এতগুলো ভালো কাজ করার পরও একটা এজেন্ডা তুলতে গিয়ে উপস্থাপকের মুখে যেন দুনিয়ার সব কালো মেঘ ভর করল। ইউসেপ বাংলাদেশ পরিচালিত প্রায় সবগুলো জেনারেল স্কুল ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে কারিগরি ইনস্টিটিউটে রূপান্তরিত হবে। এর ফলে ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের ৫২০ জন হতদরিদ্র শিশুর সাধারণ শিক্ষা সংকটের মুখে পড়বে। ইউসেপ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে আশেপাশের স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে এবং সহযোগিতা করছে। কিন্তু শংকার বিষয় হল, এই স্কুলের সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হলে প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বছরের শুরুতেই ঝরে পড়বে। কারণ তারা খুবই হতদরিদ্র পরিবারের। তাঁর এই আশঙ্কাকে আরো জোরালো করেছেন সেখানে উপস্থিত ঘাসিটুলা স্কুলের দুই শিক্ষার্থী ও একজন অভিভাবক যিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক। তাদের সবার কথা যদি ইউসেপ স্কুল তাদের পড়াশোনার সুযোগ না দেয় তবে তাদের পক্ষে আর অন্য কোথাও ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এমন কথা শুনে সভার সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যগণ তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং যেহেতু ফান্ডের অপ্রতুলতার কারণে এই সব শিক্ষার্থীগণ শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়তে যাচ্ছে, তাই তাঁরা এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

উল্লেখ্য, ইউসেপ বাংলাদেশ সিলেট অঞ্চলে ২০০৮ সাল থেকে তার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বর্তমানে ফান্ডের অভাবে এই প্রতিষ্ঠান তার সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যাপ্তি বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আর এই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের প্রায় ৫২০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর শিক্ষা জীবন সংকটের মুখে পতিত হবে।

ইউসেপ কর্তৃপক্ষ বলছেন বৈশিষ্ট্য হলো নির্বাহ করার মত যদি স্থানীয়ভাবে দাতা খুঁজে পাওয়া যায় তবে সেক্ষেত্রে এলাকার চাহিদা মোতাবেক তাঁরা সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।

 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি