শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন দাবীতে হরিজন সম্প্রদায়ের অবস্থান কর্মসূচী

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি;
  • প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২১, ৬:২৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন দাবীতে পৌরসভায় অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন। শহরতলীর কলেজ রোডস্থ হরিজন পল্লীর বাসিন্দারা দুপুরে পরিবার পরিজন সহ মিছিল সহকারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়। এই হরিজন পল্লীর লোকজন পৌর শহরের ঝাড়ু দেওয়া থেকে শুরু করে পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ করে।

সোমবার ( ২৪ মে ) দুপুরে পৌরসভার সামনে প্রায় অর্ধশতাধিক হরিজন সম্প্রদায়ের নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। প্রায় ঘন্টা খানেক পৌরসভায় অবস্থান নেওয়ার পর পরে তারা পৌরসভার কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার পর হাতে ঝাড়ু নিয়ে শ্লোগান দিয়ে পৌরসভা ত্যাগ করেন।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিদের তারা বলেন, আমরা নৌকায় ভোট দেই কিন্ত আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন নেই, আমাদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। আমাদের শৌচাগার দরকার, নেই পানির ভালো ব্যাবস্থা। ঘরের ভিতরে অনেক জায়গাতেই ফাটল দেখা দিয়েছে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ঘরে। আমরা ঘরগুলোতে ভয়ে ভয়ে থাকি, আমাদের কথা কেউ ভাবে না।

হরিজন পল্লীর সর্দার রঞ্জন হরিজন বলেন, আমরা শহরের সব ময়লা আর্বজনা পরিস্কার পরিছন্ন করি, কিন্তু আমরাই থাকি সবচেয়ে খারাপ পরিবেশে। আমাদের ভালো শৌচাগার নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, আমাদের ঘরগুলোর অবস্থাও খুবই সুচনীয়। আমরা খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে থাকি সারাবছর। পৌরসভা থেকে আমরা যে মজুরী পাই তা খুবই কম। এই মজুরী দিয়ে আমাদের সংসার চালানো কষ্টকর। পৌরসভার কাছে টয়লেট, পানির ব্যবস্থা, ঘর নির্মান করে দেওয়ার জন্য আমরা বার বার বলে আসলেও তারা এগুলো গুরুত্বই দিচ্ছে না। এই করোনা কালিন সময়েও আমাদের কোনো সহযোগিতা কেউ করে নাই।

এদিকে উপজেলার ইউএনও স্যারকে অনুরোধ করে আমরা কিছু সরকারি কাজ পেয়েছিলাম আমাদের জন্য পানির ব্যবস্থা ও টয়লেটের ব্যবস্থা করার জন্য ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছেন ইউএনও স্যার। কিন্ত পৌরসভা থেকে সেই কাজও বন্ধ করে দিয়েছে। পৌরসভা বলেছে কাজ করে দিবে কিন্ত মাসের পর মাস ঘুরিয়েও কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তারা নিজেও কাজ করবে না আর অন্য জনকেও কাজ করতে দিবে না।

এই কারনে আমরা আজ আমরা আমাদের দাবী নিয়ে পৌরসভায় একত্রিত হয়েছি। আমাদের দাবী না মানলে আমরা কাল থেকে কাজ করা বন্ধ করে দিবো।

বিষয়টি নিয়ে প্রভাষক ও নারী নেত্রী জলি পাল বলেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান যাদের নাম মাত্র। তাদের ব্যাপারে সরকারী সহযোগিতা ও পৌরসভার আন্তরিকতা অতীব জরুরী।

এ বিষয়ে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, গত ২০১৯ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে ৬০টি আধুনিক ঘর নির্মান করে দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছিলো। এই ঘর গুলোতে টয়লেট, পানি সব ব্যবস্থা থাকবে। করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারনে বরাদ্ধ আসে নি। তাই কাজগুলো করা হয়নি। উপজেলা পরিষদ থেকে উদ্যোগ নিয়ে করা কাজ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, পৌরসভার ভিতরে কাজ করতে চাইলে পৌরসভাকে জানাতে হবে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি