সব
সিলেটে শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। পূজার জন্য সিলেটের ৬৭০ টি মণ্ডপে চলছে সাজ সাজ রব। ইতোমধ্যে পুজার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, আগামী রবিবার (১০ অক্টোবর) থেকে মহাপঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা। পর্যায়ক্রমে আসবে দশমীর দিন। যে দিন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় উৎসব।
সিলেটের বেশ কয়েকটি পূজা মন্ডপে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমার কাঠামো তৈরির কাজ শেষ। এখন চলছে প্রতিমার সাজ-সজ্জা ও রঙয়ের কাজ। একই সাথে চলছে মন্ডপের তোরণ নির্মাণ এবং আলোকসজ্জার কাজ।
পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার তথ্যা অনুযায়ী, সিলেট জেলায় ৫৪০ টি মণ্ডপে হবে পূজা উদযাপন। আর মহানগর এলাকায় হবে ৬৭ টি মণ্ডপে। মহানগরের মধ্যে সার্বজনীন ৫০টি ও পারিবারিক ১৫টি মণ্ডপ রয়েছে। সবমিলিয়ে ৬০৭টি মণ্ডপে মহাধুমধামে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে এখন।
তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির বিষয়টিও মাথায় রাখছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজো আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, আগামী ১০ অক্টোবর মহাপঞ্চমীর মধ্যে দিয়ে শারদ উৎসব শুরু হবে। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দেবী দুর্গার বর্ণিল সাজ-সজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ। প্রতিমায় রঙ করা হচ্ছে। পূজোর যাবতীয় উপকরণ, পূজো, পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, চণ্ডীপাঠ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতি, ভজন কীর্তন, আলোকসজ্জা ও ডেকোরেশনসহ নানান প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
পূজোর দিন ঘনিয়ে আসায় শিল্পীদের এখন চরম ব্যস্ততা। রঙ-তুলির আঁচড়ের শেষ কাজটুকু করছেন তারা।
নগরীর দাড়িয়াপাড়ার বল্লব নারায়ন মত্তশিল্পীর সত্বাধিকারী দুলাল পাল বলেন, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। চলছে রঙ-তুলির কাজ। শনিবার রাতের মধ্যেই প্রতিমাগুলো পৌছে যাবে মন্ডপে মান্ডপে।
নগরীর বিপনী বিতানগুলোতেও দুর্গাপূজাকে ঘিরে চলছে কেনাকাটার উৎসব। সিলেটের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, নয়াসড়ক, কুমাড়পারা অ লামাবাজার ঘুরে দেখা যায় ক্রেতাদের ভীড়। কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় ছিল লক্ষ্যনীয়।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা, জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা ও পরিদর্শন বই রাখার জন্য আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি। আশা রাখছি, এবার সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদ উৎসব আনন্দ-উল্লাসে উদ্যাপন করা হবে। সবাই যনো স্বাস্থ্যবিধি মানেন।
এদিকে, পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজরদারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, দুর্গাপূজায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে ১ জন করে পুলিশ এবং পর্যাপ্ত আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া সাদা পোষাকে এবং পোষাকী পুলিশ সদস্যরা টহলে থাকবেন।
সিলেট রেঞ্জের পুলিশ সুপার (মিডিয়া এন্ড ক্রাইম এনালাইসিস) জেদান আল মুসা বলেন, দূর্গা পূজাকে ঘিরে সিলেট বিভাগে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বিষয়ে আজ ৬ অক্টোবর মতবিনিময় সভা হয়েছে। পূজার সময় নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে জন্য সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ষষ্ঠি পূজার দিন থেকে প্রতিটি মন্ডপের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুজামন্ডপের সামনে জানজট নিরসনে ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করবে। সাদা পোশাকেও বিভিন্ন পূজামন্ডপে পুলিশ সদস্যরা থাকবে।
এদিকে, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সিলেট বিভাগের সর্বত্রই নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নগরীতে প্রতিমা নির্মাণের সময় নিরাপত্তা দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয় সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার। এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বি,এম, আশরাফুল্লা তাহের বলেন, সিলেট নগরীতে আসন্ন দুর্গাপূজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বিষয়ে ২ অক্টোবর মতবিনিময়সভা হয়। পূজার সময় নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে জন্য সবধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা শুরুর আগের দিন থেকে প্রতিটি মন্ডপের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুজামন্ডপের সামনে জানজট নিরসনে ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করবে। সাদা পোশাকেও বিভিন্ন পূজামন্ডপে পুলিশ সদস্যরা থাকবে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষয়া সামগ্রী, স্যানিটাইজার, অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও নিরপত্তার স্বার্থে প্রতিটি মন্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে মন্ডপগুলোতে পুলিশের সাথে বিভিন্ন সেচ্চাসেবীরাও কাজ করবেন।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি