শতভাগ আলোকিত হলো ওসমানীনগর, জকিগঞ্জ, রাজনগর

সিলেট ডায়রি ডেস্ক ;
  • প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২০, ৭:১৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

দেশের আরও ২৮টি উপজেলার সাথে শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় ঝলমলে হলো সিলেটের ওসমানীনগর, জকিগঞ্জ মৌলভীবাজারের রাজনগর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের দুই জেলার ৩ উপজেলাসহ ১৮টি জেলার ৩১টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও, তিনি এ সময় দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ১১টি গ্রিড সাব-স্টেশন এবং ছয়টি নতুন ট্রান্সমিশন লাইনের উদ্বোধন করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের ২০২১ সাল নাগাদ দেশের প্রতিটি বাড়ি আলোকিত করার লক্ষ্য পুনর্নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আর ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি বাড়ি আলোকিত করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে। তিনি মানুষকে বিদ্যুতের অপচয় না করার জন্য আবারো আহ্বান জানান।


শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনেই একটি মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হয়। আমরা এখন এলএনজি আমদানি করছি এবং এখনও বিদ্যুৎ খাতে বিরাট অংকের ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সবাইকে এ কথা মাথায় রাখতে হবে যে সরকারের পক্ষে সব সময় এই বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয়া সম্ভব নয়।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই দেশের শতকরা ৯৭.৫ ভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি এবং আশা করছি ২০২১ সাল নাগাদ আমরা দেশের সব মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষে তার সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আমরা অধিকতর শিল্পায়নের লক্ষে সারাদেশে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি আর এভাবে আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছি। এজন্য বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ স্থাপন করেছে। দেশে যত বেশি আইসিটি ব্যবহার বাড়বে, বিদ্যুতের চাহিদাও ততই বৃদ্ধি পাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না, বিদ্যুৎ কেন্দ্রও নির্মাণ করছে, একই সঙ্গে সঞ্চালন লাইনের ব্যবস্থা করছে। আমরা গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন স¤প্রসারণ করছি এবং বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি। এর ফলে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর হার মাত্র ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৭৪ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সঞ্চালন এবং বিতরণ লাইন বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন করছি।
সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনের বহুমুখীতার উল্লেখ করে শেখ হাসিনার বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন গ্যাস, কয়লা ও সৌর শক্তি প্যানেলের মাধ্যমে উৎপন্ন হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৫৮ লক্ষ সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে এবং গ্রিড লাইন স্থাপন করা হচ্ছে যাতে সৌর শক্তি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিড লাইনে যোগ করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে সব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া যায় সে লক্ষে সরকার সৌর প্যানেল স্থাপনের জন্য ত্রাণ সহায়তা ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির ৫০ শতাংশ এই খাতে বরাদ্দ ব্যয়ের ব্যবস্থা করেছে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের উন্নয়ন শুধু রাজধানী বা শহর কেন্দ্রিক নয়। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি গ্রামকে শহরের সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন রূপে গড়ে তুলে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিদ্যুতের অপব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি তারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হয় তাহলে তারাই উপকৃত হবে। বিদ্যুৎ অপব্যবহার পরিত্যাগে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করে তিনি বলেন, কম বিদ্যুতের বিল এলে আপনিও উপকৃত হবেন। এ সময় বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় থেকে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্ট সচিবগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত : বঙ্গবন্ধু থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এতে বিগত ১১ বছর বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

সূত্র-একাত্তরের কথা

 

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি