সব
কানাইঘাটের লোভাছড়ার পাথর নিলামের আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা।
বিনাদোষে তাদের এমন কঠোর শাস্তি দিলে মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির ধাক্কা সামলে উঠতে না পেরে তাদের কেউ কেউ আত্মহুতির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে রবিবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন লোভাছড়া পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি হাজী নাজিম উদ্দিন।
লোভাছড়া আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেড ও মূলাগুল পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সদস্যদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজস্ব দিয়ে কেনা পাথর ব্যক্তিগত ভূমিতে রেখে আমরা অবসারণের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তর কোটি কোটি টাকার পাথর নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিজ্ঞপ্তি বাতিল না করলে আমাদের পথে বসতে হবে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। এমনকি আর্থিক ক্ষতির ধাক্কা সামলে উঠতে না পেরে আত্মহুতি দিতে হতে পারে। লোভাছড়া পাথর কোয়ারির ইজাদার কানাইঘাটের জুলাই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নানের ছেলে মস্তাক আহমদ পলাশের কাছ থেকে ইজারার মেয়াদের ভেতওে সরকারী রশীদমূলে প্রায় ৫শ’ স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী পাথর কিনে নদীর তীরে ব্যক্তিগত জমিতে সংরক্ষন করি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাথর অপসারণ সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত লোভাছড়ার পাথর উত্তোলন হয় এবং মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নৌপথে তা অপসারণ করা হয়। এ বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী শুরু হয় মহামারি করোনার তান্ডব। বাংলাদেশেও মার্চ থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় মে মাসে নদীতে পানি এলেও পাথর অপসারণ সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি সরকার দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন, কিন্তু করোনা অতংকে শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়ায় সব পাথর সরানো সম্ভব হয়নি। এখনো প্রায় ২০ কোটি টাকার পাথর সংরক্ষিত। পাথর অপাসারণে প্রচুর টাকা খরচ করে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার পরপরই পরিবেশ অধিদপ্তর ১৭ জুলাই পাথর নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। করোনার কারণে আমাদের কোন আয় রোজগার নেই, এ অবস্থায় জমি-গহনা বিক্রি করে বিনিয়োগ করা টাকায় কেনা পাথর যদি নিলাম হয়, তাহলে ৫শ’ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে পথে বসতে হবে। এমনকি ব্যাংক ঋনের টাকা পরিশোধ করাও আমাদের সম্ভব হবেনা। পলাশের ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও স্তুপকৃত পাথরের মালিক আমরা। এগুলো নিলাম হলে আমাদের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
তিনি বলেন, লোভাছড়ায় এখনো পানি আছে। পাথর পরিবহনে কোন সমস্যা হবেনা। আমরাও শ্রমিকদের নিয়ে প্রস্তুত। সরকার অনুমতি দিলে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা তা পরিবহন করতে সক্ষম। আমাদের আরেকটিবার সুযোগ দিলে আমরা সব পাথর অপসারণ করব। তিনি সিলেটের গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বন ও পরিবেশন মন্ত্রী, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে বিষয়টি বিবেচনা করে, প্রায় ৫শ’ ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক দুর্গতি থেকে রক্ষায় নিলামের আদেশ প্রত্যাহার ও তাদের ক্রয়কৃত পাথর সরিয়ে নেয়ার আরেকটি সুযোগ প্রদানের জোরালো দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- পাথর ব্যবসায়ী মো. গিয়াস উদ্দিন, মো. সিরাজ উদ্দিন, আলতাফ হোসেন, শরিফ উদ্দিন, ফখরুল, নজমুল, মো. সুহেল চৌধুরী, মো. ইসলাম উদ্দিনসহ লোভাছড়া আদর্শ পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি ও মূলাগুল পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি