সব
বাংলাদেশে চা শিল্পের বিকাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চা শিল্প’ নামক গ্রন্থ’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ গ্রন্থমালায় স্থান পেয়েছে এ বইটি। বইটি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী মেধাবী শিক্ষার্থী ও চা শ্রমিক সন্তান রাজু দেশোয়ারা। বইটি প্রকাশ করেছে শূন্য প্রকাশনী। যার মূল্য ৪’শ টাকা।
বইটি প্রসঙ্গে লেখক রাজু দেশোয়ারা বলেন, আজকের বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা সচল এবং বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। তবে বাংলাদেশ নামক এই উন্নয়ন পরিবহনের দ্রুতগামী ও টেকসই একটি চাকার নাম হলো ‘চা শিল্প ও তার জনশক্তি’। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যয়ভার এই খাত থেকে আসছে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, চা শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যপক অবদান রাখলেও এই খাত নিয়ে বাংলাদেশে খুব একটা গবেষণামূলক কাজ হয়নি। আর এই অপ্রতুলতা ঘোচাতেই আলোচ্য বইটি লেখার প্রয়াস। এই বইয়ে বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশে চা শিল্পের বিকাশ, এই শিল্পেও সমস্যা ও সম্ভাবনাসহ অন্যান্য উন্নত চা শিল্পবান্ধব দেশের সাথে তুলনামূলক একটি চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের চা শিল্পেও কালপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বকালীন অবস্থায় চা শিল্প ও চা শ্রমিকদেও নিয়ে তাঁর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি ও অবদান নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে।
বইটির মূল প্রবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী নীলুফার আহমেদ বলেন, উনিশ শতকের শুরুতে বাংলাদেশে চা শিল্পেও বিকাশ ঘটে। এ শতকের শেষভাবে একক জেলা হিসেবে সিলেট সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে চা উৎপাদনে শীর্ষ এবং বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নেয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরে চা ছিল দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। শ্রমঘন এ শিল্পে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক (চা শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্যমতে) কাজ করছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন অভিযাত্রায় সামিল। এ উন্নয়ন অভিযাত্রায় সারথি হিসেবে চা শিল্পকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে এ শিল্পেও বর্তমান সমস্যা এবং অপার সম্ভাবনার বিষয়টি নীতি নির্ধারকদের নিকট উপস্থাপন অতীব জরুরি। সে বিবেচনায় গভেষণাধর্মী বইটিতে লেখক যে বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন তা চা শিল্পেও প্রসারে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। একই সঙ্গে, এ বইয়ে চা শিল্পকে ঘিরে জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি বইটিতে বিধৃত রয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় লেখকের বিচরণ ছিল চা শিল্পেও ইতিহাস, ঐতিহ্য থেকে শুরু করে বর্তমান সময়কালে। একই সাথে তিনি সফলতার সাথে প্রক্ষেপণ করেছেন চা শিল্পেও ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি।
প্রসঙ্গত, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার চাতলাপুর চা বাগানের সন্তান রাজু দেশোয়ারার বাবা শ্রীজনম দেশোয়ারা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। কাশীনাথ আলাউদ্দিনস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। নাড়ীর টানে চা শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করার নির্দেশনা পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে। রাজু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদের উপদেষ্টা এবং দুর্বার উন্নয়ন সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি