মা ও দুই শিশুর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার : দুটি কারণ নিয়ে কাজ করছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক ;
  • প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১, ৪:০৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ২ বছর আগে

সিলেটের গোয়াইনঘাটে দুই শিশুসহ মায়ের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচনে দুটি ক্লু-নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। হত্যাকা-ে ব্যবহৃত বটি জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহে অথবা মামার বাড়ির সম্পত্তির ভাগ নেওয়া নিয়ে এই হত্যাকা- ঘটে থাকতে পারে। এদুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই তদন্তকাজ চালাচ্ছে পুলিশ।

নিজঘরের বটির আঘাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে ওই বটিসহ আরও কিছু জিনিসপত্র জব্দ করেছে।

বুধবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়ায় নিজবাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩৫) আট বছরের ছেলে মিজানুর রহমান ও তিন বছরের শিশুকন্যা তানিশা বেগম। এঘটনায় আহত অবস্থায় নিহতের স্বামী হিফজুর রহমান (৩৮) উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

খবর পেয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনসহ পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এবিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, দুটি সম্ভাব্য কারণকে সামনে রেখে পুলিশ কাজ করছে। এর একটির হচ্ছে পার্শবর্তী রাধানগর গ্রামে শ্যালিকার বিয়ে নিয়ে স্ত্রীর সাথে স্বামীর ঝগড়া এবং হিফজুর রহমান তার মামার বাড়িতে থাকেন। মায়ের সম্পত্তির ভাগ মামার বাড়ি থেকে আদায় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ দুটি কারণকে সামনে রেখে মামা-মামিসহ আশপাশের অন্তত ৫ থেকে ৬ জনকে আমরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।

তিনি বলেন, আশা করছি খুব শিঘ্রই আমরা এই হত্যাকা-ের ক্লু-উদঘাটন করতে পারব। পুলিশের একাধিক বিভাগের লোকজন এনিয়ে কাজ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, আজ সকালে প্রতিবেশীরা হিফজুর রহমানের ঘরের ভেতর থেকে গোঙানির শব্দ পান। ডাকাডাকি করা হলেও কেউ সাড়া দিচ্ছিলেন না। ঘরের দরজা খোলা পেয়ে প্রতিবেশীরা ভেতরে ঢুকে চারজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাদের ঘাড়ে ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। মা ও দুই শিশু মৃত ছিলেন। আহত হিফজুরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল আহাদ বলেন, ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপার স্যারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন। তাঁদের নির্দেশনায় কাজ করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, যে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এই বটি নিহতদের ঘরেরই। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারী পরিবারেরই কেউ হতে পারেন। তবে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

নিহতদের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি