‘ভাবির মামলায় গ্রেপ্তারকৃত নির্দোষ ভাইয়ের মুক্তি চাই’

সিলেট ডায়রি ডেস্ক;
  • প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২০, ৩:৪৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

তালতো ভাইয়ের প্ররোচনায় ভ্রাতৃবধুর মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় পুলিশ বিশ্বনাথের অসুস্থ নেপুর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে। তার মুক্তি চেয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের হয়রানি না করার আহবান জানিয়েছেন এ উপজেলার বাইশঘর গ্রামের মৃত বুজুর আলীর ছেলে ও নেপুর আলীর ছোট ভাই মো. জুনেদ আহমদ।

সোমবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার ভাবির মামলা দায়েরের প্রেক্ষাপটও বিস্তারিত বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, গত ৫ জুলাই তার ভাবি নেপুর আলীর স্ত্রী ও বিশ্বনাথ উপজেলার কাহিরঘাট গ্রামের মৃত সোনা উল্লাহর মেয়ে সাফিয়া বেগম একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। ১২ জুলাই ভাবির বাড়িতে থেকে তার মা ভাইসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজন আমাদের বাড়িতে আসেন নবজাতককে দেখতে। হঠাৎ তালতো ভাই গেদু মিয়া ভাবির ঘরে গিয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন। আমি তাদের আস্তে কথা বলার অনুরোধ জানালে গেদু আমার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গায়েও হাত তুলেন। সন্ধ্যার পর কাহিরঘাটের তৈমুছ আলী, তারেক হাসান দুলাল, চান্দবরাং গ্রামের কামরুজ্জামান সেবুল, লহরী গ্রামের জুবায়ের আহমদ ফাত্তাহসহ কয়েকজন মুরব্বি বাড়িতে আসেন। তারা জানান, আমরা নাকি ভাবির ভাইবোনসহ অন্যান্যদের আটকে রেখেছি বলে মোবাইলে গেদু তাদের জানিয়েছে। এ সময় বাড়িতে বাইশঘর গ্রামের সামসুল ইসলাম সমুজ, কিয়াছত আলী, শানুর মিয়া, ছইল উদ্দিন, লহরী গ্রামের শানুর মিয়াও উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই দেখেন যে, সেখানে নবজাতককে নিয়ে আনন্দ চলছে।

তিনি বলেন, পরে ভাবি বাবার বাড়ি বেড়াতে যেতে চাইলে সবার সম্মতিতে তিনি সেখানে গিয়েছেন। পরদিন একটি অনলাইন সংবাদ পত্রে খবর প্রকাশ হয়যে, আমরা নাকি তালইর বাড়ির লোকজনকে আটকে রেখেছিলাম। তাদের উদ্ধার করেছেন চান্দবরাং গ্রামের কামরুজ্জামান সেবুল। সেবুল এ ঘটনা অস্বীকার করে ঐ সংবাদপত্রে প্রতিবাদও পাঠিয়েছিলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, তিনি কাউকে উদ্ধার করেন নি। বরং আত্মীয়দের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া ভূল বুঝাবুঝির অবসান ঘটিয়েছিলেন তারা কয়েকজন। কিন্তু তবু ভাবি তার ভাই গেদু মিয়ার প্ররোচনায় ১৬ জুলাই বিশ্বনাথ থানায় বড় ভাই মো. নেপুর আলীসহ ৪ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন (নম্বর-১২, ১৬/০৭/২০২০)।

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ১২ জুলাই আমরা ৩০ হাজার টাকা যৌতুক না দেয়ায় তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধোর করেছি। এ ব্যাপারে আমরা কাহিরঘাটের মুরব্বিদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সদুত্তর পাইনি।

জুনেদ বলেন, সেদিনই পুলিশ নেপুর আলীকে গ্রেপ্তার করে এবং অসুস্থ দেখে বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

তিনি বলেন, আমার দুই ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী। মাত্র ৩০ হাজার টাকার জন্য যৌতুক চেয়ে আমরা কিভাবে মানসম্মান বিসর্জন দিয়ে ভ্রাতৃবধু ও তাইলর বাড়ির আত্মীয়স্বজনকে মারধোর করতে পারি? এটা কি কেউ বিশ্বাস করবেন? বাস্তবতা হচ্ছে, কেউ তা বিশ্বাস করছেনই না।

তিনি সিলেটের পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের প্রতি মামলাটি সুষ্ঠ তদন্তের আবেদন এবং তার অসুস্থ ভাইয়ের মুক্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- তার তালতো ভাই গেদু মিয়ার পক্ষের মুরব্বি তৈমুছ আলী, তারেক হাসান দুলাল, চান্দবরাং গ্রামের কামরুজ্জামান সেবুল, লহরী গ্রামের জুবায়ের আহমদ ফাত্তাহ ও জুনেদ আহমদের পক্ষের সমসুল ইসলাম সুমজ, কিয়াছত আলী, শানুর মিয়া, ছইল উদ্দীন, নাজমুল ইসলাম চৌধুরী অপু ও আমির উদ্দিন।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি