সব
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি। ঘটনাটি তদন্ত শেষে সম্প্রতি সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, গ্যাস কিংবা এসিড থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়নি বলে তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন।
জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক তানিয়া সুলতানা রোববার (০৬ জুন) প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন কীভাবে পুড়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, গ্যাস কিংবা এসিড থেকে আগুন লাগার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, এটা নিশ্চিত। তদন্ত শেষে আমরা প্রতিবেদন ডিসি স্যারের কাছে জমা দিয়েছি। তিনি (ডিসি) প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়েছেন। তবে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। এরপরও অধিকতর তদন্তের কোনো নির্দেশনা আসলে তা তদন্তে করে দেখা হবে।
এদিকে এর আগে উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে ওই কমিটিও তদন্তে ইউনিয়নে আগুন লাগার কোনো কারণ নিশ্চিত হতে পারেনি। ঘটনাটি তদন্তের পর তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, বৈদ্যুতিক ত্রুটি, বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত অবশিষ্টাংশ এবং বজ্রপাতের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়নি। এতে ইউনিয়নে পরিকল্পিতভাবে কেউ আগুন ধরিয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল সকালে উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভবনে আগুন লাগে। ওইদিন সকাল ৮টার দিকে বড়লেখা থানার ওসি মৌলভীবাজারে যাওয়ার পথে দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিনকে জানান এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সেমিপাকা ৫টি কক্ষ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে চেয়ারম্যানের কক্ষ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ডিজিটাল সেন্টার ও গ্রাম আদালতের কক্ষসহ পাঁচটি কক্ষের পাশাপাশি ইউনিয়নের ৫টি ক¤িপউটার এবং গুরুত্বপূর্ণ সকল নথি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ঘটনাটি তদন্তে ওইদিনই বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূসরাত লায়লা নীরাকে আহ্বায়ক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান ও ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার অনুপ কুমার সিংহকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
পাশাপাশি ঘটনার দিন জেলা প্রশাসন থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক তানিয়া সুলতানাকে আহবায়ক এবং জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (স্থানীয় সরকার শাখা) মো. রুহুল আমীনকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যবিশিষ্ট পৃথক আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি