সব
বিআরটিসি বাস চলতে বাধা দিচ্ছেন ব্যক্তিমালিকাধিন বাস মালিক সংগঠনের শ্রমিকরা। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে সিলেট-হবিগঞ্জ ও সিলেট-শ্রীমঙ্গল রুটে বিআরটিসি বাস চলার কথা ছিলো। সকালে হুমায়ুন রশীদ চত্বর থেকে যথারীতি সিলেট-হবিগঞ্জ, সিলেট-শ্রীমঙ্গল রুটে বিআরটিসি বাস ছেড়ে যেতে চাইলে বিপত্তি বাধে।
শ্রীমঙ্গলগামী একটি বাস ছেড়ে শেরপুর যাওয়ার পর বাসটি আটকে দেন শ্রমিকরা। চত্বর এলাকায় বিআরটিসি’র কাউন্টার ও ম্যানেজারকে মারধর করেন হবিগঞ্জ বাস মালিক সংগঠনের শ্রমিকরা। এর পর আর কোন বাস ছাড়া হয়নি। পরে বিকাল সাড়ে ৩ টায় হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে আরও একটি বাস ছাড়া হয়েছে।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রশাসনের উদ্যোগে এই বিষয়টি মিমাংসার জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি এ বিষয় নিয়ে। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে এ বিষয়ে আরেকটি বৈঠক অুষ্ঠিত হবে। এতে সমাধানের কথা রয়েছে।
বিআরটিসির সিলেটের ম্যানেজার জুলফিকার আলী জানান, সিলেট বিভাগীয় বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার পর বাসটি বিকাল সাড়ে ৩ টায় হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছাড়া হয়েছে। তবে পরিবহণ শ্রমিকদের সাথে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আগামীকাল সোমবার বিকাল ৪ টায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার বিকেলে বিআরটিসির কর্মকর্তা, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে ওই বৈঠকে সমাধান হয়নি। সোমবার আবারও তাদের নিয়ে বৈঠক হবে। এতে সমাধানের আশা করা যাচ্ছে।
এদিকে, সকালে বিআরটিসি বাস ছাড়া নিয়ে হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরা ভাংচুর করে, লুটপাট করে। বিআরটিসি সিলেটের ম্যানেজার জুলফিকার আলী জানান, হামলায় নেতৃত্ব দেন হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমদ। এসময় পলাশের সাথে ছিলেন মানিক আহমদ, সবুজ মিয়া, মুক্তা আহমদ, কাশেম মিয়া, শ্রমিক নেতা রুনু মিয়া, আব্দুল মুহিম, মানিক মিয়া।
বিআরটিসি শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে হবিগঞ্জ বাস মালিক সমিতিসহ অন্যরা হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল রোডে বিআরটিসি বাস যাতে করে চলাচল না করে সেজন্য তারা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে সিলেট থেকে বিআরটিসির একটি বাস শ্রীমঙ্গলে যাত্রী নিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের নিয়ে বিআরটিসি বাস কাউন্টারে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। হামলাকারীরা হবিগঞ্জ বাস মালিক সংগঠনের শ্রমিক।
তারা আরও অভিযোগ করেন, এসময় হামলাকারীরা বিআরটিসির ম্যানেজার জুলফিকার আলীকে মারধর করে, কাউন্টার থেকে ল্যাপটপ ও সাড়ে ১২হাজার টাকা, ১টি আইফোন মোবাইল নিয়ে যায়। বিআরটিসি বাসের কাউন্টার ভাংচুর, লুটপাট করা হয়।
পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ১০ টায় সিলেটের কদমতলী এলাকার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার বিআরটিসির কাউন্টার থেকে বাস দুটি শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জের উদ্যেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিলো। একটি বাস কাউন্টার ছেড়ে গেলেও পথে আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। আরেকটি বাস আটকে অর্ধশতাধিক পরিবহন শ্রমিকরা বিআরটিসির কাউকন্টারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ম্যানেজারকে মারধর করে। শ্রমিকদের বাধায় নির্ধারিত সময়ে বাসটি সিলেট ছেড়ে যেতে পারেনি।
শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দা শিক্ষক বিধান সিংহ নামের একজন যাত্রী জানান, সিলেট-শ্রীমঙ্গল রুটে বিআরটিসি বাস চালু আমাদের প্রাণের দাবি। এই দুই রুটে বিআরটিসি বাস চালু হওয়াতে আমাদের দাবি বাস্তবায়িত হয়েছে। এখানে বাধা দেয়া শুধু বাস মালিকদের স্বার্থরক্ষা ছাড়া কিছু না।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি