সব
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান প্রকল্পে কাজ করছে সরকার। এরই আলোকে সারা দেশের ন্যায় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায়ও চলছে এই প্রকল্পের কাজ। স্থানীয় ভাবে প্রকল্পটির দেখভাল করছেন বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ মন্ডল সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাবৃন্দ। তারা এই প্রকল্পটি সুষ্ঠু ভাবে বাস্তবায়নের জন্য দিন-রাত সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদেরকে সহযোগীতা করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ।
সম্প্রতি এই প্রকল্পের অধীনে উপজেলার পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়নের ঐয়া মৌজার খাস খতিয়ানের ১৬৬১ নম্বর দাগের জায়গার একটি অংশ নিয়ে স্থানীয় ভাবে বেশ মাতামাতি চলছে। ঐ খাস জায়গার দখলে থাকা দিনমজুর আব্দুস সালাম মনাই পূর্বপৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।
তার অভিযোগ- ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঐয়া মৌজায় প্রভাবশালীদের দখলে থাকা খাস জায়গায় গৃহ নির্মানের সুপারিশ না করে স্থানীয় দিনমজুর, কৃষক ও খেটেখাওয়া মানুষের দখলে থাকা খাস জায়গায় ঘর নির্মানের সুপারিশ করেছেন।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে দিনমজুর আব্দুস সালাম মনাই জানান, তারা ১১ ভাইয়ের মধ্যে ৪ ভাই ঐ জায়গায় তাদের নিজ পরিশ্রমে মাটি ভরাট করে গৃহনির্মাণের উপযোগী করে তুলেছেন। সম্প্রতি মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে গৃহনির্মান প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ঘর নির্মানের উপযোগী খাস জায়গা অধিগ্রহন করে উপজেলা প্রশাসন। প্রথম দিকে যাদের জায়গা ডিমারগেশন করা হয়েছিল, পরবর্তীতে ঐ জায়গা সমূহের দখলে থাকা লোকদের সাথে আতাত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
যে কারণে প্রথম দিকে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা খাস জায়গা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা ছাড় দেয়া হয়। জায়গা ছাড়ের দফারফার অংশ হিসেবে আব্দুস সালাম মনাইয়ের সাথেও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন জায়গা ছাড়ের জন্য ১২ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে জানান তিনি। তিনি তার ভাইদের সাথে আলাপ করে এই টাকা তাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয় বলে জানান।
এ বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানান তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন টাকা না পেয়ে তাদের দখলকৃত জায়গায় গৃহ নির্মানের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
আব্দুস সালাম মনাই আরো বলেন, আমরা ভিটেমাটিহীন দিনমজুর, অসহায় মানুষ। অনেক কষ্ট করে আমরা নিজ পরিশ্রমে এই খাস জায়গায় মাটি ভরাট করে ঘর নির্মানের উপযোগী করে তুলেছি। কিন্তু খরচের টাকা না দিতে পারায় ইউপি চেয়ারম্যানের নজর পড়েছে আমাদের দখলকৃত এই জায়গার উপর। অথচ আমাদের ঐ একখন্ড জমির আশেপাশে অনেক খাস জায়গা পড়ে আছে। সেগুলো প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় তারা চেয়ারম্যানকে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদান করে তা ছাড় করিয়ে নিয়েছে। আমরা টাকা দিতে না পারায় আমাদের দখলকৃত জমিতেই ভূমিহীনদের ঘর নির্মানের প্রস্তুতি চলছে।
তার ঐ এক খন্ড জায়গায় গৃহনির্মাণ না করে তাকে মাথা গোঁজার টাই দিতে তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক ভাবে আবেদন করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে পূর্বপৈলনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহনির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সকল কার্যক্রম বালাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উপর ন্যাস্ত। ইউএনও মহোদয় নিজে এই জায়গাটি নির্ধারণ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন।
বালাগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলাশ মন্ডল বলেন, এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখার এখতিয়ার ইউএনও মহোদয়ের রয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, আব্দুস সালাম মনাই এর জায়গায় যাতে ঘর নির্মাণ না করা হয় এ বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য একটি লিখিত আবেদনপত্র আমি পেয়েছি।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি