সব
শাল্লা উপজেলায় মাউতির বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ছায়ার হাওরের জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। রোববার ভোরে উপজেলার ছায়ার হাওরের হাওর রক্ষা বাঁধ ৮১ নং প্রকল্প বাঁধটি ভেঙে যায়।
এই বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। তবে ছায়ার হাওরে এই দুই জেলার আংশিক জমিও রয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে নিমিষেই তলিয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি। তবে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি জানিয়েছেন ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধের সভাপতি ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যদি তাদের কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, হাওরের ভেঙ্গে যাওয়া ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
এদিকে কৃষি অফিস ও পাউবো’র দাবী ছায়ার হাওরের ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকরা এটা মানতে নারাজ। কৃষকদের দাবী হাওরের ৭০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকী ৩০ ভাগ ধান বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে। পিআইসির সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ছায়ার হাওরে পার্শ্ববর্তী জেলা কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা ও নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ী উপজেলার কৃষকদের জমি রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে , ছায়ার হাওরে ৪ হাজার ৬শ ৩৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙ্গে ৫ ভাগ ধান তলিয়ে যাচ্ছে।
বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে নারী পুরুষ সবাই নেমেছে হাওরের ধান কাটতে। এমনকি স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট শিক্ষার্থীরাও বসে নেই। সবাই হতাশায় ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সুখলাইন গ্রামের সুমন দাস বলেন, এমনিতেই পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাঁধ ঝুঁকিতে ছিল। এরপর শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ওই সময় বাঁধটি ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে থাকে। চোখের সামনেই নিমিষে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের ফসল। তিনি আরো বলেন, ১৬ কেয়ার জমি করেছি। এর মধ্যে ১২ কেয়ার জমির ধান কাটা হয়েছে। বাকী ৪ কেয়ার ফসলী জমি বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এবার প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামে ৩০ মার্চ। প্রথম দফায় ঢলের ধাক্কা সামলিয়ে দ্বিতীয় দফায়ও হাওরের বাঁধগুলোতে দিনে রাতে শ্রম দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তবে তৃতীয় দফায় এসে আর রক্ষা করা হয়নি। উপজেলায় এবছর এই প্রথম একটি বাঁধ ভেঙ্গে হাওর তলিয়ে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাল্লা উপজেলা শাখার উপ সহকারি প্রকৌশলী (এসও) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, যে বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করছে এটা ভেঙ্গে যাওয়ার কথা না। তবে এই বাঁধ কেউ কেটে দিয়েছে কি না এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ছায়ার হাওরের ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আর বাকী ৫ ভাগ ধান বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা তদন্ত করছি এই বাঁধ কেউ কেটে দিয়েছে কি না?
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি