সব
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামবাসীকে একটি প্রভাবশালী মহল নানাভাবে হয়রানী করছে। সংঘবদ্ধ এই চক্রে জড়িত কাদিপুর গ্রামের দরছ আলী, লুৎফুর রহমান, অলিউর রহমান, হাবিবুর রহমান, মিজানুর রহমান ও কবির মিয়াসহ তাদের সহযোগীরা। তারা এলাকায় মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত।
তারা সদ্য সাবেক ইউপি সদস্য নেপুর আলী ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান, জাবেদ আহমদ, আনোয়ার হোসেন, রুহেল মিয়া ও কামাল আহমদসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনা উল্লেখ করে একাধিক মামলা দায়ের করে যাচ্ছেন।
সামাজিকমাধ্যমসহ বিভিন্নমাধ্যমে মানহানিকর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ওই প্রভাবশালী চক্রটির হাত থেকে কাদিপুর গ্রামবাসীকে রক্ষার জন্য দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বৃহস্পতিবার (০৫ মে) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে কাদিপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনোয়ার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালে গ্রামের একটি সরকারি রাস্তা নিজেদের নামে নামকরণের চেষ্টা চালায়। তৎকালিন সময়কার ইউপি সদস্য নেপুর আলীসহ গ্রামের লোকজন সেটি প্রতিহত করেন। পরে লুৎফুর রহমানের পিতা ধন মিয়ার নামে জোরপূর্বক নামকরণের সাইনবোর্ড স্থাপন করে। পরে নেপুর আলীসহ গ্রামবাসী প্রশাসনের সহযোগিতায় সাইনবোর্ডটি অপসারণ করেন। প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে দরছ আলী ও লুৎফুর রহমানের লোকজন নেপুর আলী, সাজ্জাদুর রহমান, জাবেদ আহমদসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, দরছ আলী ও লুৎফুর রহমান একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রামের নিরীহ লোকজনকে হয়রানী চালাচ্ছেন। কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে তাদের সহযোগী আনোয়ার আলীকে বাদি করে সাবেক নেপুর আলীসহ গ্রামের নিরিহ ৯ ব্যক্তিকে আসামি করে গত ১৬ এপ্রিল ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রভাবশালী চক্রের সহযোগী কবির মিয়া, দুধাই মিয়া, রিপন মিয়া, দিলোয়ার হোসেন ও ধন মিয়ার পুত্র মিজানুর রহমান সংঘবদ্ধভাবে নির্যাতিতার স্বামীর সহযোগিতায় এক মহিলাকে ভাড়াটিয়া বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণসহ নানাভাবে নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। ওই নারী তাদের কবল থেকে পালিয়ে গিয়ে তৎকালীন ইউপি সদস্য নেপুর আলীকে জানান। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিষয় জেনে নেপুর আলী নির্যাতিতাকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ওসমানী মেডিকেলের ওসিসি বিভাগের মাধ্যমে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বালাগঞ্জের বাবরকপুর গ্রামের এক নির্যাতিতা গৃহবধু তার স্বামী সহযোগী চুনু মিয়াসহ কাদিপুর গ্রামের দুধাই মিয়া, রিপন মিয়া, কবির মিয়া, দিলোয়ার হোসেন ও মিজানুর রহমানকে আসামি করে ওসমানীনগর থানায় একটি নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের ব্যাপারে সত্যতা পেয়ে পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলাটি তদন্তাধিন থাকাবস্থায় লুৎফুর রহমান, অলিউর রহমান দেশে এসে মামলার বাদি ও তার মাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে মামলার এজহারকৃত মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে চেনেন না বলে আদালতে এভিডেভিট প্রদান করিয়ে নেন। পরবর্তীতে গত ২৬ এপ্রিল দরছ আলী, লুৎফুর রহমান, অলিউর রহমানসহ সংঘবদ্ধ মহলের সদস্যরা গ্রামের ধন মিয়ার বাড়িতে লোকজন জমায়েত করে সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে নির্যাতিতা ও তার মাকে উপস্থিত করে সামাজিক মাধ্যমে লাইভে গ্রামের নেপুর আলী ও সাজ্জাদ আলীর নামে অপ্রচার চালায়। দরছ আলী ও লুৎফুর রহমান কর্তৃক নির্যাতিতাকে ব্যবহার করে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য প্রকাশ করার পর তদন্তকাজের অংশ হিসাবে থানা পুলিশ লুৎফুর রহমান ও দরছ আলীর বাড়িতে গিয়ে বাদির সন্ধান চাইলে পুলিশের কাছে বাদির সন্ধান দিতে বিভিন্ন কৌশলে অপারগতা প্রকাশ করে যাচ্ছেন।
লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, শুধু উপরোক্ত ঘটনাই নয় এর আগে ২০১৭ সালের দরছ আলীসহ তার সহযোগী মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে গ্রামের মতছির আলীকে মারপিট করা হয়। দরছ আলীসহ সহযোগিদের আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২০৫/১৭) মতছিরের স্ত্রী সালমা বেগম। এরপর থেকে দরছ আলী ও মিজানুর রহমানসহ তার সহযোগীরা সালমা বেগমসহ তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকিধামকি অব্যাহত রেখেছেন।
গ্রামবাসীর পক্ষে দাবি করা হয়, ২০১৯ সালের মিজানুর রহমান জনৈক নাসির উদ্দিনকে ইজারাদার দেখিয়ে গ্রামের জাবেদ আহমদকে আসামি করে গ্রামের বাসিন্দাদের নামীয় একটি দিঘীতে বিষ প্রয়োগে মাছ মেরে ফেলার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। আদালত মামলা থেকে জাবেদকে অব্যাহতি দিয়েছেন। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে প্রকাশ্য কাদিপুর গ্রামের সরকারী রাস্তা থেকে কয়েকটি বড় গাছ কেটে গাড়ি যোগে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেছেন। অভিযোগটি প্রশাসনের কাছে প্রমাণিত হয়েছে। গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু মিজানুর রহমান গাছ কাটার বিষয়টি প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে ধামাচাপা দিয়ে ফেলেছে। উল্টো তারা গাছকাটার প্রতিবাদকারীদের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামি করেছে।
লিখিত বক্তব্যে গ্রামবাসী দাবি করেন, চলতি বছরের ১৫ মার্চ বিশ্বনাথে ঘটনাস্থল উল্লেখ করে মারামারি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ২২ মার্চ আদালতে মামলা (নং-১২৮/২২) দায়ের করেন বিশ্বনাথ পুরান বাজার এলাকার এক নারী। মামলায় পরিকল্পিতভাবে কাদিপুর গ্রামের প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, জাবেদ আহমদ, কামাল হোসেন ও রুহেল আহমদকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ ওই নারীর সাথে অভিযুক্তদের কোনোদিনও দেখা হয়নি। ওই নারীকে তারা কোনোদিন দেখেনওনি। গ্রামবাসী বিষয়টি অনুসন্ধান করে জানতে পারেন কাদিপুর গ্রামের প্রভাবশালীচক্রটি অর্থের বিনিময়ে জনৈক নারীকে ম্যানেজ করে এই মামলা করিয়েছে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনে অভিযুক্তরা ভালো মানুষ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। দরছ আলী টাকার বিনিময়ে একাধিক নিরীহ নারীকে ভিকটিম বানিয়ে কাদিপুর গ্রামের স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধিসহ নিরিহ লোকদ
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি