প্রণোদনার নামে প্রতারিত মুক্তিযোদ্ধা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি;
  • প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২০, ১২:২৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

মো. আব্দুর জাহির ৭৫ বছরের বৃদ্ধ। দেশ মাতৃকার টানে স্বাধীনতা যুদ্ধে গিযেছিলেন একাত্তরে। শত্রুর বিরুদ্ধে লড়েছেন প্রাণপণে। তার মহান কীর্তির সম্মাননা হিসেবে প্রতিমাসে সরকারি ভাতাও পাচ্ছেন তিনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে সারাদেশের মানুষ যখন বিপর্যস্ত তখন সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের প্রণোদনাও প্রদান করছে। মুক্তিযোদ্ধারাও আশা রাখেন সরকার তাদের প্রণোদনার আওতায় আনবেন। ১৮ জুলাই বিকেলে সুনামগঞ্জের এই বৃদ্ধের কাছে ফোন আসে প্রণোদনা বিষয়ে। খুশিতে ভরে উঠে তার মন। কিন্তু তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি, প্রতারকচক্রের বিছানো জালে জড়িয়ে পড়ছেন নিজে।
প্রণোদনার তালিকায় নিজের নাম নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে জামানত প্রদানের কথা জানান জনৈক ব্যক্তি যার মোবাইল নম্বর ০১৮১৭-৩৯৮৭৬৩ এবং তিনি সোনালী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখার ম্যানেজার হিসেবে নিজের পরিচয় দেন। তিনি তাকে একটি মোবাইল নম্বর (০১৬৪০-৫২০৬০৭) দিয়ে সেটিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের নম্বর বলে সেখানে যোগাযোগের কথা বলেন এবং সন্ধ্যা ৬টার ভেতর জামানতের ৪২ হাজার টাকা জরুরি ভিত্তিতে ম্যানেজারের বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলেন।
পরের দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কথা বলে ১ লাখ টাকার চেক পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এমন খবরে হতবিহ্বল বৃদ্ধ মো. আব্দুল জাহির প্রণোদনা হারানোর ভয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই ৩ বারে ৪২ হাজার টাকা প্রদান করেন। টাকা পৌঁছানোর পরপরই মোবাইল নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকবার চেষ্টা করেও সংযোগ না পেয়ে সন্দেহ হলে তিনি তার সন্তানদের বিষয়টি অবগত করেন। তারা তাকে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
লোকলজ্জার ভয়ে তিনি তা প্রকাশ করতে চাইছিলেন না। কিন্তু অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা বা অন্য কেউ যেন প্রতারিত না হন সেজন্য তিনি সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন (নম্বর- ৮৬২)। বিষয়টি অবগত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও।
প্রতারিত মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল জাহির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের কাছে তার টাকা ফেরত পেতে সহযোগিতা কামনা করেন। বর্তমানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব প্রতারকদের বিভিন্ন সময় আটক করা হয়েছে, যা তাকে আশা জোগাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এ টাকা তিনি প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে পরের দিনই পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধার করেছিলেন। এখন তা পরিশোধ করা তার পক্ষে অসম্ভব।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি