সব
লম্বা বিরতির পর দেশের মাটিতে ফিরল আন্তর্জাতিক ফুটবল। উজ্জীবিত বাংলাদেশ মেলল আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা। নাবীব নেওয়াজ জীবন দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করলেন বদলি নামা মাহবুবুর রহমান সুফিল। নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশ রাঙিয়ে রাখল ফেরার দিনটি।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রথম প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে হওয়া দুটি প্রীতি ম্যাচের সিরিজে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে দুই দল।
করোনাভাইরাসের থাবায় গত মার্চ থেকে বন্ধ ছিল বাংলাদেশের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবল। মাঝে মেয়েদের ফুটবল শুরু হলেও ছেলেদের খেলা এই প্রথম মাঠে গড়াল। দর্শকও ফিরল গ্যালারিতে; যদিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দুরত্ব মেনে বসার পরোয়া করেনি তারা। মাঠে ফেরার আনন্দে মাতোয়ারা ছিল সবাই।
জাতীয় দলের হয়ে এই ম্যাচে অভিষেক হয় গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো ও ফরোয়ার্ড সুমন রেজার। ক্যারিয়ারের শুরুটা তাদের হলো এককথায় দুর্দান্ত।
নবম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রোয়ের পর ডি-বক্সের জটলার মধ্যে বল পেয়েও মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তপু বর্মন।
সমর্থকদের আনন্দে ভাসিয়ে দশম মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। নাবীব নেওয়াজ জীবনের পাস ধরে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা সাদ উদ্দিন দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বল বাড়ান গোলমুখে। নিখুঁত স্লাইডে জাল খুঁজে নেন জীবন।
২১তম মিনিটে ব্যবধান হতে পারত দ্বিগুণ। জীবনের ক্রসে দুরের পোস্টে থাকা মোহাম্মদ ইব্রাহিমের হেড ডিফেন্ডারের গায়ে লাগে। একটু পর বিশ্বনাথের থ্রোয়ে তপুর হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ২৭তম মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর মানিক মোল্লার ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
করোনাভাইরাসের থাবায় আট খেলোয়াড়কে হারানো নেপালকে প্রথমার্ধের পুরোটা সময় চাপে রাখে বাংলাদেশ। ৩২তম মিনিটে সাদের ক্রসে জীবনের ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
সাত মিনিট পর অঞ্জন বিসটার দুর্বল শট সহজেই গ্লাভসে নেন জিকো। বিরতির আগে গোলের উদ্দেশে এটাই ছিল নেপালের একমাত্র শট!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মানিকের বদলি নামেন ফরোয়ার্ড সোহেল রানা। একটু পর জীবন, জামালকে তুলে বিপলু আহমেদ ও মাহবুবুর রহমান সুফিলকে নামান বাংলাদেশ কোচ। কিন্তু দলের আক্রমণে প্রথমার্ধের ঝাঁজ ছিল না মোটেও। তবে রিয়াদুল হাসান-বিশ্বনাথ-রহমত মিয়া-তপুতে সাজানো রক্ষণ ছিল জমাট।
৭৫তম মিনিটে তপুর ফ্রি-কিক গোলরক্ষক কিরণ কুমার লাবু ফিস্ট করার পর বল ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর থ্রো ইনে অনন্তা তামাংয়ের হেড আঙুলের টোকায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে বের দেন জিকো।
প্রতি-আক্রমণে সুফিলের দারুণ গোলে ৮০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। সোহেলের বাড়ানো বল ধরে মাঝ মাঠের একটু ওপর থেকে আক্রমণে ওঠা সুফিল বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে ঠাণ্ডা মাথায় দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন।
এরপর তপুকে তুলে নিয়ে ইয়াসিন খানকে নামান বাংলাদেশ কোচ। বাকিটা সময় নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দল।
২০১৩ ও ২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ এসএ গেমসে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের প্রতিযোগিতায়ও তাদের কাছে ১-০ গোলে হারে দল। হারের বৃত্ত থেকে অবশেষে বেরিয়ে এলো জেমি ডের দল।
বাংলাদেশ সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছিল গত ২৩ জানুয়ারিতে; বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমি-ফাইনালে বুরুন্ডির বিপক্ষে ৩-০ গোলে হেরেছিল ডের দল।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি