ধলই চা বাগানের শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা দেবে ২৩ পঞ্চায়েত কমিটি

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি;
  • প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২০, ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

বে-আইনীভাবে ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় বন্ধ করা হয়েছিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলই চা বাগান। দীর্ঘ ১৩ দিন ধরে ধলই চা বাগান বন্ধ থাকায় ধলই চা বাগানের শ্রমিক পরিবারে আর্থিক সহায়তা দানে মনু-ধলই ভ্যালীর ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকেরা নিজেদের মজুরী থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। সভাপতি-সম্পাদক, চা শ্রমকি ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রোববার (৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় ধলই চা বাগানের সমস্যা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মনু-ধলই ভ্যালীর কার্যকরি কমিটির সভাপতি ধনা বাউরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা, মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, মাসিক চা মজদুর পত্রিকার সম্পাদক সীতারাম বীন, চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ২৩টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকরা বলেন, যে কারণে শ্রম আইন ১৩ ব্যবহার করে চা বাগান বন্ধ করা যায় সে ধরণের কোন পরিস্থিতি বিরাজ করেনি ধলই চা বাগানে। গত ২৩ জনু ধলই চা বাগানের ব্যবস্থাপক অন্যায়ভাবে সে বাগানের শ্রমিক রাধে শ্যাম ভরের সন্তানকে বেদড়কভাবে পিটিয়ে আবার উল্টো একটি মুচলেখা নিয়েছিল এক সপ্তাহের মধ্যে এ পরিবার ধলই চা বাগান ত্যাগ করতে হবে। এর ফলে ২৩ জুন ধলই চা বাগানের সহস্রাধিক চা শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করে চা বাগান ব্যবস্থাপকের অপসারণ দাবি করেছিল। এর পর ইউনিয়ন পর্যায়ে ধলই চা বাগান কোম্পানীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই দফা সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে ধলই চা বাগানে স্বাভাবিক কাজ কর্ম চলছিল। কিন্তু ২৭ জুলাই ধলই চা বাগান বে-আইনীভাবে শ্রম আইন ১৩ ধারা ব্যবহার করে ধলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরবর্তীতে আরও দুই দফা বৈঠক হলেও ধলই চা বাগান খোলার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এমতাবস্থায় ধলই চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এজন্য মনু-ধলই ভ্যালীর ২৩টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সম্পাদকদের উপস্থিতিতে এ মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভার অতিথি বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, ধলই চা বাগান কোম্পানী যাচ্ছে চা বাগান বন্ধ ও শ্রমিকদের মজুরি বন্ধ রেখে শ্রমকিদের আর্থিক কষ্টে রাখতে। এ বিবেচনায় মতবিনিময় সভায় ২৩ টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের সাপ্তাহিক মজুরি থেকে ২০ টাকা করে প্রদান করবে ধলই চা বাগান শ্রমিকদের জন্য। এ সিদ্ধান্তের সাথে অন্যান্য ভ্যালীর চা বাগান পঞ্চায়েতরাও ধলই চা বাগান শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে আগ্রহী হয়েছে। রাম ভজন কৈরী আরও বলেন, তাদের জোর দাবি অভিলম্বে ধলই চা বাগান খুলে দিতে ও বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে ধলই চা বাগান থেকে অপসারণ করে নিতে হবে। অন্যতায় চা শ্রমিকরা আরও কঠোর আন্দোলন শুরু করবে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি