সব
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার( মধনগর) উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিন ইউনিয়নের বংশীকুন্ডা মমিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভুয়া অষ্টম শ্রেণী পাশের সার্টিফিকেটের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে। সে কোনদিন নিন্ম মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
তবুও ৮ম শ্রেণি পাস সার্টিফিকেট ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের টপকে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পেয়েছেন নিরাপত্তা কর্মীর চাকরি। ওই প্রার্থী ৮ম শ্রেণির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি বলে স্বীকার করলেও চাকরিদাতারা তাকেই সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা (মধ্যনগর) উপজেলার বংশীকুন্ডা মমিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এমনটি ঘটেছে।
গত বুধবার ভুয়া সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল আলমের আস্থাভাজন ব্যক্তি রুহুল আমিন নামের একজনকে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছে নিয়োগ বোর্ড। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। বংশীকুন্ডা গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন একজন মোটরসাইকেল চালক।
প্রধান শিক্ষক এ বিদ্যালয়ে চাকরি লাভের পর থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে বসবাস করলেও রুহুল আমিনের বাড়ি থেকে তিন বেলায় খাবার আনিয়ে খান। এ জন্য রুহুল আমিনের পরিবারকে মূল্য পরিশোধ করেন প্রধান শিক্ষক। এরই সূত্র ধরে প্রধান শিক্ষকের সাথে রুহুল আমিনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গেল বছরের ১৩ ডিসেম্বর এ বিদ্যালয়ে ১ জন নিরাপত্তা কর্মীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ৮ম শ্রেণি পাসের (এসএসসি পাস অগ্রাধিকার) আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এতে রুহুল আমিনসহ ৬ জন আগ্রহী প্রার্থী আবেদনপত্র দাখিল করে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টায় ধর্মপাশা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৬ জন প্রার্থীই অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষা শেষে রুহুল আমিনকে উত্তীর্ণ করে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা। বিতর্কিত এ ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা লাক সাব নামের এক প্রার্থী বলেন, ‘অত্র এলাকায় সবাই জানে রুহুল আমিন টু-থ্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ভূয়া সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি নিয়েছে। আমি চাকরি পাইনি তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হউক।’
রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। কিন্তু ৮ম শ্রেণির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি। এই বিদ্যালয় থেকেই ২০০৮ সালের ৮ম শ্রেণি পাস সার্টিফিকেট নিয়ে আগেও একই বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সে (রুহুল আমিন) ৮ম শ্রেণিতে পাস করেছে এবং ৮ম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট আমার কাছে দিয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় সে ভালো করেছে তাই তার চাকরি হয়েছে। চাকরিতো আমি দেইনি। চাকরি দিয়েছে নিয়োগ কমিটি।’
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সনজিদা আক্তার বলেন, ‘৮ম শ্রেণিতে পাস করেনি- সে (রুহুল আমিন) কীভাবে বলবে? আগের একটি নিয়োগ পরীক্ষায় সে সেকেন্ড ছিল। নিয়োগ বোর্ড সার্টিফিকেট না দেখেতো আর নিয়োগ দেয়নি। সার্টিফিকেট না দেখে নিয়োগ দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ফোন দিয়েছে। স্কুল থেকে নেওয়া সার্টিফিকেট ভুয়া বলা যাবে না। আর যদি ভুয়া হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, ‘যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি