সব
৭৫ বছর থেকে শুরু করে ১৯ বছরের তরুণ নানা বয়সি দেশি-বিদেশি ১২ দৌড়বিদের অংশ গ্রহণে সিলেটে পঞ্চমবারের মতো হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার দলে দলে সিলেট ক্বীন ব্রিজ এলাকায় জড়ো হন দৌড়বিদরা। ঠিক ভোর ছয়টায় এক বাশিঁতে ছোট-বড় হাজারো দৌড়বিদ তাদের দৌড় শুরু করেন ।
সবুজ শ্যামল চা গাছে ঘেরা সিলেট বিমান বন্দর সড়ক হয়ে সিলেট ২২ টিলা এলাকা প্রদক্ষিন করেন দৌড়বিদরা। ১০ বছর বয়সী থেকে ৭৫ বছর দৌড়বিদদের দেখা মেলে এই ম্যারাথনে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সিলেট রানার্স কমিউনিটির আয়োজনে, ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথন ২০২২ সার্কিট হাউজের সামনে থেকে বন্দর, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, এয়ারপোর্ট রোদের বাইশটিলা গিয়ে ইউটার্ন নিয়ে সিলেট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ লাক্কাতুরা সিলেটে এসে শেষ হয়।
ইভেন্টে আয়োজকদের নিজস্ব ২০০ জন ভলান্টিয়ার কাজ করেন। যারা রোড সেফটির পাশাপাশি ফার্স্ট এইড সাপোর্ট প্রদান করেন।
আয়োজকরা জানান, ম্যারথনে সর্বমোট এক হাজার ২০০ দৌড়বিদের সমন্বয়ে ২১.১ কিলোমিটার ও ১০ কিলোমিটার দুই ক্যাটাগরিতে ইভেন্টটি হয়।
২১.১ কিলোমিটারে ৪০ জন নারী ও ৩০০ জন পুরুষ মিলে ৩৪০ জন অংশ নেন। ১০ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ৭০ জন নারী ও ৭৯০ জন পুরুষ মিলে মোট ৮৬০ জন দৌড়বিদ অংশ নেন।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমি যখন দেখি ৭৫ বছর বয়সের মানুষরাও দৌড়ান ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেন তখন আমি অনুপ্রেরণা পাই, সুস্থ মন সুস্থ দেহ সুস্থ জাতি গঠনে খেলাধুলার বিকল্প নেই। ক্রিকেট-ফুটবল যেভাবে আমাদের নাম বিশ্বের বুকে লিখিয়েছে আমি মনে করি আমাদের রানারও ঠিক একই ভাবে আমাদেরকে বিশ্ব উপস্থাপন করবেন এবং অনেকে করছেন এমন আয়োজনে আমি আনন্দিত।
সমাপনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ডিআইজি ও সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার ফয়সল মাহমুদ, মো. জহুর আহমদ প্রধান শিক্ষক সিলেট সরকারী উচ্চবিদ্যালয়, ইউনিমার্টের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা মর্তুজা রহমান।
অনুষ্ঠানে সিলেট রানার্স কমিউনিটির এডমিন, মনজুর আহমেদ আরিফ,সৈয়দ ফজলুর রহিম সোহাগ,মোঃ হাসান আহমেদ, আবু সালেহ, ফয়েজ জামান, মোহাম্মদ মিজান, মো. আলী কামাল সুমন, মাহমুদুর রহমান মিতুল,কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১০ কিমি (পুরুষ) চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন গোলাম রাহাত তোফায়েল। ১ম রানার আপ – সাজ্জাদ হোসেন স্নিগ্ধ। ২য় রানার আপ – আশরাফুল আলম কাশেম ও তৃতীয় রানার আপ- আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ৪র্থ রানার আপ – জসিম উদ্দিন আহমেদ।
১০ কিমি (মহিলা) চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন স্নেহা জান্নাত। এছাড়া ১ম রানার আপ-আফসানা হালিমা, ২য় রানার আপ-শারমিন আখতার। ৩য় রানার আপ – শাহ তামান্না সিদ্দিকা। ৪র্থ রানার আপ-অ্যাডলিনা রোদেলা
২১.১ কিমি (পুরুষ) দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন- মো. আসিফ বিশ্বাস। ১ম রানার আপ -কাওসার আহমেদ ২য় রানার আপ- মো. আজিজুল ইসলাম। ২১.১কিমি (মহিলা) চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নাসরিন বেগম। ১ম রানার আপ -নার্গিস জাহান ওহাব। ৩য় রানার আপ- সাইদা আখতার।
সিলেট রানার্স কমিউনিটির এডমিন এবং আয়োজক কমিটির সদস্য ডা. ওরাকাতুল জান্নাত জানান, আমাদের এবারের এই আয়োজনের একটি বিশেষ উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে ইউনেস্কো থেকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সিলেটের শীতলপাটিকে সবার সামনে তুলে ধরা। দিন দিন আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি অবহেলায় হারিয়ে যেতে চলেছে তাই এবার ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথনের মাধ্যমে আমরা শীতলপাটিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি যেন আমরা আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারি।
সিলেট রানার্স কমিউনিটি ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যাত্রা শুরু করার পর বিভিন্ন ধরণের দৌড় প্রতিযোগিতা আয়োজন ও দৌড়বিদদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং মানুষকে মানসিক আর শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করছে।
২০১৯ সালের সিলেট মিনি ম্যারাথন দিয়ে যাত্রা শুরু এ ধরনের আয়োজনের। ২০১৯ এর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে ব্র্যান্ডল্যান্সার সিলেট হাফ ম্যারাথন ২০২০, জানুয়ারি ২০২১ এ র্যাাব ফোর্সেস সিলেট হাফ ম্যারাথন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হল সিলেট হাফ ম্যারাথনের পর এবারের পঞ্চম বৃহৎ আয়োজন এই হাফ ম্যারাথন।
এই আয়োজনের প্রধান পৃষ্টপোষক হিসেবে আছেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য চেইন সুপার শপ ইউনিমার্ট। এর পাশাপাশি পৃষ্টপোষক হিসেবে আছেন – মেসার্স সুরভী এন্টারপ্রাইজ, ফিজা এন্ড কোং, এস এম সি প্লাস , আই টি চাম ও প্যারাডোন্টেক্স।
ইভেন্টে আমাদের নিজস্ব ২০০ জন ভলান্টিয়ার কাজ করেছেন, ৫০ জনের ফার্স্ট এইড টিম দিয়েছে প্রাথমিক সেবা।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি