সব
দীর্ঘ ৮ দিন ধরে বন্ধ মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জের দলই চা বাগান। মালিকানাধীন চা বাগানটি খুলে দেয়ার জন্য ৪ আগস্ট বিকাল ৪ টায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দফা ত্রিপক্ষীয় বৈঠক সাড়ে চার ঘন্টা ধরে চললেও কোন সমঝোতা হয়নি। বৈঠকে খবরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিকাল হতে অবস্থান নেয় শত শত চা শ্রমিক নারী,পুরুষ। রাত ৮টায় সমঝোতা না হওয়ায় উত্তেজিত শত শত চা শ্রমিক পরিষদের প্রধান ফটকের রাস্তায় বাগান চালু করার দাবীতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বিপুল সংখ্যাক পুলিশ ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। শ্রমিকরা বিতর্কিত ম্যানেজার(ব্যবস্থাপক)কে অপসারণ করার জন্য শ্লোগান দিতে থাকে। শ্রমিকরা বিক্ষোদ্ধ হয়ে উঠলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক কেন্দ্রীয় নেতা রামভজন কৈরী, কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান, স্থানীয় এমপির ভাই ইমতিয়াজ আহমেদসহ বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ অবস্থান নেয়া চা শ্রমিকদের শান্ত থাকতে আহবান জানান। বক্তব্যের সময় বিশৃঙ্গলা সৃষ্টি হয়। পুলিশ চা শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে নেয়।
এর আগে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভবনের হল রুমে দ্বিতীয় দফা মালিক পক্ষ, শ্রমিক পক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন,কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, শ্রম অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গলস্থ কার্যালয়ের শ্রম কর্মকর্তা মোশাহিদ বক্স চৌধুরী,উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিছ বেগম, কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এ এস এম আজাদুর রহমান,কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, দলই চা বাগান কোম্পানীর এজিএম খালেদ খান, বাংলাদেশী চা সংসদ (চা বাগান মালিকদের সংগঠন) প্রতিনিধি শামছুল ইসলাম, কমলগঞ্জ উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহমদ, মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানু,ধলই চা বাগানের অভিযুক্ত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামসহ সহকারি ব্যবস্থাপকবৃন্দ, চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালির সভাপতি-সম্পাদক, ধলই চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ চা শ্রমিকরা। বৈঠকে মালিক পক্ষ থেকে বর্তমান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে বহাল রাখার দাবী জানান। আবার চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ব্যবস্থাপকে সরানোর দাবী জানান। এক পর্যায়ে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ধলই চা বাগান মালিক পক্ষের প্রতিনিধি, শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের শ্রম কর্মকর্তা সমন্বয়ে আলাদা গোপন বৈঠক বসে। কিন্তু বৈঠকে কোন সমাধান না হওয়ায় আগামী শনিবার তৃতীয় দফা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় পরিষদ ভবনের সামনে উপস্থিত শ্রমিকদের কাছে পৌছালে তারা বিক্ষোদ্ধ হয়ে উঠেন। নানা শ্লোগান দিয়ে প্রধান প্রশাসনিক প্রধান গেইটের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন শ্রমিকরা। মুহুর্তেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তলব করা পুলিশ। প্রায় এক ঘন্টা ধরে রাস্তায় অবস্থান করার পর শ্রমিকদের শান্ত করতে ছুটে আসেন সভা শেষে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
অনেক বুঝানোর পর পুলিশি সহায়তায় রাত ৯টায় চা শ্রমিকরা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বাগানে ফিরে যান।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, মালিক পক্ষের অসহযোগীতার কারনে চা বাগান চালু করার উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে। আজও তারা ব্যবস্থাপককে বহাল রাখার দাবী জানানোই কোন সমাধানে আসছে না।
ওসি আরিফুর রহমান বলেন, চা শ্রমিকরা কিছুটা উত্তেজিত হলেও নেতৃবৃন্দের সহযোগীতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক রাতে বলেন, দলই চা বাগানের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আগামী বৈঠকে একটা সমাধান হবে আশা করি। সভা শেষে চা শ্রমিকরা কিছুটা উত্তেজিত হলেও পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি