সব
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর হিফজু উলুম সিনিয়র আলীয়া মাদ্রাসার ৬টি বিভিন্ন পদে প্রায় ৩০লাখ টাকার ঘুষে বাণিজ্যে জামায়াতে ৩জন,বিএনপি ২জন ও এক জন ছাত্রলীগের কর্মীর লোক নিয়োগের অভিযোগ উঠছে। পদ গুলো হল, অধ্যক্ষ, উপাদধ্য, হিসাব রক্ষক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার,নাইটগার্ড ও আয়া। এই নিয়োগ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আবেদনকারী প্রার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট আলীয়া মাদ্রাসায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও কমিটির সদস্য তালিমুল ইসলাম (দুলাল) নিজের স্ত্রী, চাচাত ভাই বিএনপি, জামায়াতের লোকদের নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার দিন সকাল থেকে চালান ব্যাপক তৎপরতা আর তিনটি পদে মোট তিনজন প্রার্থী রাখেন। আর অফিসসহকারীসহ অন্যান পদেও সিলেক্টেড করে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া হজম করতে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী ও তার লোকজনকে নেয়া হয় কৌশলে। তারা নিজ মাদ্রাসায় ও জেলায় নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে সিলেট বিভাগের আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল(ডিজির প্রতিনিধি) ও তাহিরপুর উপজেলা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে নিয়োগ সাক্ষারের জন্য সকাল দশটায় শুরুর কথা থাকলেও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ১১টা ২০ মিনিটে শুরু হয় আর মৌখিক পরীক্ষা হয় ওইদিন দুপুরে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তাহিরপুর হিফজু উলুম আলীয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং সভাপতি আমিনুল ইসলামের আপন চাচাত ভাই ও কমিটির সদস্য তালিমুল ইসলাম(দুলাল) এর আপন ভাই শরীফ মিয়া(দল জামায়াত), উপাধক্ষ্য পদে মহিবুর রহমান (জামায়াত), হিসাব রক্ষক পদে সভাপতি আমিনুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে এক জন বিএনপি ও জামায়াতে গুরুত্বপূর্ন পদে রয়েছে তার বাবা,চাচা,ভাই। তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়দল গ্রামে বাড়ি নাম মুতাসিম বিল্লাহ। নিরাপত্তা রক্ষী পদে সভাপতির নিজস্ব লোক। আয়া পদে ভাটি তাহিরপুর গ্রামের একজন মহিলা সভাপতির পাশের বাড়ি নিজস্ব লোক (বিএনপি) উর্ত্তীণ হয়।
স্থানীয়রা জানান,ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পরীক্ষায় শুরু থেকেই অভিযোগ করে উঠেছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপার,ডিজির প্রতিনিধি তাদের নিজের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে কয়েকদফা মিটিং করেন। এই অনিয়ম বন্ধ করতে ও সচ্চতায় সাথে নিয়োগ নেওয়ায় জন্য জেলা প্রশাসকের কাছেও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল। এরপর নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে সিলেট আলীয়া মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষা নেয় কৌশলে। এই নিয়োগ বাতিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতি যার কাছ থেকে বেশি টাকা পেয়েছেন তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আগ থেকেই ডিজির প্রতিনিধি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে ম্যানেজ করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। এ জালিয়াতির নিয়োগ বাতিল চাই। জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী এখন মাদ্রাসায় জামায়াতে লোক দিয়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেছে। এখানে প্রকৃত মেধাবীরা টাকার কাছে হেরে গেছেন। এই নিয়োগ বাতিল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করি।
রোবিনা আক্তার নামে আরেক প্রার্থী জানান, আমি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে আবেদন করেছিলাম। পরীক্ষার আগেই জানতে পারি মাদ্রাসার সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টরা অর্থের বিনিময়ে নিজেদের পছন্দ মত লোক নির্ধারন করেছেন। তাই সিলেট গিয়ে টাকা নষ্ট না করে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে নি। এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করি।
আরেক প্রার্থী রনি জনান,আমি ন্যায় সংজ্ঞত ভাবে,সকল বৈধ কাগজ পত্র দিয়ে আবেদন করার পরও ইন্টারভিউ এর কার্ড পাইনি। কারন লোক আগেই নির্ধারণ করা ছিল৷
তাহিরপুর হিফজু উলুম আলীয়া মাদ্রাসার সুপার(ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আবদুল হান্নান বলেন, নিয়োগে অনিয়ম হয় নি, নিজ প্রতিষ্ঠান কেন ইন্টারভিউ হল না এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিজির প্রতিনিধি সিলেটের বিধায় সিলেটে নেওয়া হয়েছে। ডিজির প্রতিনিধি উপজেলা বা জেলা থেকে নেওয়া যায় এই প্রশ্নের জবাবে কোন সু উত্তর দিতে পারেন নি। সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, নিয়োগে কোন অনিয়ম করা হয় নি। নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন,মাদ্রাসা নিয়োগে কোন অনিয়ম করা হয় নি আর এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান,নিজ উপজেলা ও জেলা সদরে নেওয়ার কথা কেন বিভাগে নেওয়া হল সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।
সুনামগঞ্জ ১-আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, মাদ্রাসায় নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি