তাহিরপুরে বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, তাহিরপুর;
  • প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২০, ৬:৫৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকা আমরণ অনশন শুরু করেছে। বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে প্রেমিকা ডালি আক্তার। অনশনকারী প্রেমিকা তাহিরপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ডালি আক্তার(২০) আর অভিযুক্ত প্রেমিক একই গ্রামের একলাছ উদ্দিনের ছেলে আরিফুল হক(২৩)।

এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে। আর ছেলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ার কারনে এই ঘটনাটি দামাচাপা দেওয়ার জন্য স্থানীয় কিছু মানুষ তাদের পক্ষ নিচ্ছে।

এই ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামে।

এ ঘটনায় সোমবার(২০ জুলাই) বিকালে তাহিরপুর থানার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়ের পক্ষে ভাই টিপু মিয়া।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়,উপজেলার ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের আরিফুল হক ও ডালি আক্তার একেই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তারা দুজন দুজনের সাথে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ঘরে উঠে। এক পর্যায়ে গত ৮মাস পূর্বে প্রেমিকা ডালি আক্তারকে তার পরিবারের লোকজন অন্যত্র বিয়ে দেয়। এরপরও তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক রয়ে যায়। তাদের মাঝে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে বলেও জানা যায়। বিয়ের ৩ মাস পর প্রেমিক আরিফুল হক বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বামীর কাছ থেকে তালক করায়। তালাক করার সম্পূর্ন টাকা বহন করে আরিফুল।

এরপর তাদের সম্পর্ক ভালই চলছিল। কিছু দিন ধরে বিয়ের জন্য প্রেমিকা ডালি চাপ দিলে প্রেমিক গত কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা সাতটা থেকে ডালি আক্তার প্রেমিক আরিফুল হকের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে অনশন করছে। এরপর পর থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে প্রেমিক আরিফুল ও তার মা,বাবা ঘাঁ ডাকা দিয়েছে।

মেয়ের অভিযোগ তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করেছে। স্বামীর কাছ থেকেও তালাক করিয়েছে আরিফুল। তালাকের ব্যয় বহন করেছে। এখন বিয়ে করতে রাজী হচ্ছে না।

এঘটনার পর প্রেমিক আরিফুল ও তার মা,বাবা ঘাঁ ডাকা দেওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ছেলের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ার কারনে কেউ কোন কথাও বলছে না। অনশনকারী মেয়ের কাছে কাউকে যেতেও দিচ্ছে না। ছেলের পরিবারের ইচ্চা কোনভাবে মেয়েকে বুঝিয়ে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে পারলেই হল। তার জন্য স্থানীয় কিছু দালাল কাজ করছে। এদিকে যে কোন সময় মেয়ে অগটন ঘটাতে পারে এই আশঙ্কাতে আশেপাশের মানুষ।

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা গোলাম কিবরিয়া জানান,আমি ছেলে ও মেয়ের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি দু পক্ষের সাথে কিন্তু ছেলের মা,বাবা অনশনকারী মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না। কিন্তু মেয়ের পরিবার বিয়ে দিতে রাজি। আর বিয়ে না হলে মেয়ে ছেলের বাড়িতেই অবস্থান করবে। কোন ভাবেই নিজ বাড়িতে যাবে না। কারন মেয়ের সাথে দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে।

স্থানীয় মেম্বার সাজিনুর মিয়া জানান,এই ঘটনা শুনেছি। ছেলের বাবা আমার কাছে এসেছিলেন আমি বলেছি যে ছেলেকে আসতে বলেন। সে এসে এর সমাধান করুক। সে না আসলে ত সমাধান হবে না। তবে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) দুপুরে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পরিষদের ছেলে ও মেয়ের পক্ষের লোকজন নিয়ে বসার কথা রয়েছে।

উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান খসরুল আলম জানান, এমন একটি খবর লোকজন আমাকে জানিয়েছেন। ঘটনাটি গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করছি।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার আতিকুর রহমান জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয় নিয়ে গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি