সব
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে বাড়তে থাকায় বন্যা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলে বসত বাড়ি,সড়ক সহ বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে অনেক এলাকায়। ফলে ডায়রিয়া ও পানি বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
জানা যায়,ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পানি দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দূর করতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার – তাহিরপুর, তাহিরপুর বাদাঘাট সড়কসহ অভ্যন্তরিন সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,স্বাস্থ্য কেন্দ্র,বিভিন্ন স্থাপনা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অর্ধশতাধিক গ্রামে লাখো মানুষ পানিবন্দি হওয়াসহ বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়ছে বালিজুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণকূল, আনোয়ারপুর ,পাতারি, তিওর জালাল, লোহাচুরা, বড়খলা, মাহতাবপুর বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া, ঘাগটিয়া, পাঠানপাড়া, গড়কাটি, উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনীলাইন, রাজাই, শান্তিপুর, চানপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পুরান খালাস, সাদেরখলা, চতুর্ভজ, কাউকান্দি, জামলাবাজ, তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের জামালগড়, চিকসা,গোবিন্দশ্রী, গাজীপুর, টাকাটুকিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মারালা, নোয়ানগর, রাজধরপুর, পৈন্ডপ, নোয়াগাঁও, সন্তোষপুর, ইকরামপুর, পাঠাবুকা, লামাগাঁও, দুমাল, ভবানীপুর, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বাগলী, দুদের আউটা, ইন্দ্রপুর, মন্দিয়াতাসহ ৬০টি গ্রাম।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা সাজিদুর মিয়া জানান, প্রথম দফা বন্যার পানি ঠিকমতো সরেনি। এরই মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বসত বাড়িতে এখন পানি। গত ১০দিনের ব্যবধানে দু’বার বন্যায় প্লাবিত হওয়ার বিশুদ্ধ পানিসহ চরম ক্ষতি আর দূর্ভোগের শিকার হয়েছেন গরীব,অসহায় ও দিন মজুর পরিবার। হাওর পাড়ে হাওরের ঢেউ ও নদীর প্রবল শ্রোতের পানি আর বাতাসের শো শো আওয়াজে ভীত হয়ে পড়েছেন হাওর পাড়ে বসবাসকারী মানুষজন।
দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মারালা, নোয়ানগর, রাজধরপুর, পৈন্ডপ , নোয়াগাঁও, সন্তোষপুর, ইকরামপুর, পাঠাবুকা, লামাগাঁও, দুমাল, ভবানীপুর মানিকখিলা গ্রামের বাসিন্দারা জানান,গত সাপ্তাহের বন্যার দূর্ভোগ শেষ হতে না হতে আবারও বন্যায় পাহাড়ী ঢলের পানির তোড়ে গ্রামের রাস্তাঘাট বাড়ি ঘর ডুবে গেছে। হাওরের ডেউয়ে ভেঙে যাচ্ছে বসত বাড়ি। গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারেই রান্নাবান্নার কাজ করতে পারছে না। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে, শুকনো খাবার সংগ্রহ করে তাদের খাবারের চাহিদা মেটাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, যেখানে টিউবওয়েলের ব্যবস্থা নেই সেখানে আমরা অস্থায়ী টিউবওয়েল স্থাপনের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। পানি সংক্রান্ত যেকোনো অসুবিধায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন,পাহাড়ি ঢলের পানিতে তাহিরপুরের গ্রামীণ অবকাঠামো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবারও বন্যায় মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠছে। একই সাথে গবাদিপশু নিয়েও তারা সমস্যায় পড়েছেন তাদের পাশে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ জানান,বন্যায় দূর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার,বিশুদ্ধ পানি,অর্থসহ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিজেছে ও প্রতিটি উপজেলার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক প্রতিটি উপজেলা ও প্রত্যান্ত অঞ্চলের খবরা খবর রাখছি।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি