তাহিরপুরে তৃতীয় দফা বন্যায় দূর্ভোগ

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, তাহিরপুর;
  • প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২০, ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: ৫ বছর আগে

গত তিনদিন ধরে ভারী বর্ষনের ফলে নদী ও হাওরের পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে বুধবার সকাল থেকেই বন্যাশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বানবাসি লোকজনের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দু দফায় বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে থাকা পরিবার গুলো যখন তাদের ঘরবাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দেওয়ায় আবার তাদের বন্যাশ্রয় কেন্দ্রেই থাকতে হচ্ছে পরিবার গুলোকে। হাসপাতাল,উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা পানিতে ডুবে আছে।

এদিকে উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে জাদুকাটা নদীর বিপদসীমার উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান,উপজেলায় কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এমরান হোসেন।

তৃতীয় দফা বন্যার পানিতে নিন্মাঞ্চলের প্রায় ৭০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বসত বাড়িতে পানি ওঠার কারণে সকাল থেকেই তাদের ঘরের রান্নাবান্নার কাজ হচ্ছে না। শুকনো খাবার সংগ্রহ করে তারা খদ্যের চাহিদা মেটাচ্ছে। ফলে গ্রামীন অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট পানির নীচে তলিয়ে নতুন করে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস। বধবার ১৫০টি পরিবার বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২ হাজারের অধিক পরিবার বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে।

তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুর সেতুর পূর্বাংশের এপ্রোচ নির্মানাধীন সড়ক ৪ ফুট পানির নীচে। ফলে জেলা শহরের সাথে সকল প্রকার যানবাহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ন তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক,তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,আনোয়ারপুর বাজার,উপজেলা সদরের তাহিরপুর বাজার হইতে ঠাকুর হাটি আখঞ্জি বাড়ি পর্যন্ত সড়ক,তাহিরপুর থানা সম্মূখ হতে রায়পাড়া সড়ক,যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোর বসতবাড়ি ও তাহিরপুর লামা বাজার,শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের নতুনজাজার ও শ্রীপুর বাজারসহ ৩০টি বাজার ৩ফুট পানির নীচে রয়েছে।
এছারাও তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের জামালগড়,চিকসা,গোবিন্দশ্রী,গাজীপুর, টাকাটুকিয়া,দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মারালা,সুলেমানপুর,নায়ানগর,রাজধরপুর,পৈন্ডপ,নোয়াগাঁও,সন্তোষপুর,ভবানীপুর,ইকরামপুর,পাঠাবুকা,লামাগাঁও,দুমাল,ভবানীপুর, বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া,ঘাগটিয়া,পাঠানপাড়া,গড়কাটি
বালিজুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণকূল,আনোয়ারপুর,পাতারি, তিওর জালাল,লোহাচুরা,বড়খলা,মাহতাবপুর,উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনীলাইন,রাজাই,শান্তিপুর,চানপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের পুরান খালাস,সাদেরখলা,চতুর্ভজ,কাউকান্দি, জামলাবাজ, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের,বাগলী,দুদের আউটা,ইন্দ্রপুর,মন্দিয়াতা সহ ৬০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্ধি রয়েছে।

বালিজুড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দক্ষিণকূল গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মিয়া জানান,যাদুকাটা নদী উপচে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাজারের গলিটি ২ফুট পানির নীচে পড়েছে। আর পাহাড়ী ঢলের পানির থোরে দক্ষিণকূল গ্রামের সকল রাস্তাঘাট ভেঙ্গে নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে গ্রামের সকল পরিবারেই রান্নাবান্নার কাজ করতে পারছে না। বাধ্য হয়েই সকাল ও দুপুরে চিরা আর গুড় খেয়ে খাবারের চাহিদা মিটিয়েছে।

শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মানিকখিলা গ্রামের খোকন মিয়া হোসেন বলেন,গ্রামের প্রতিটি উঠান ও বসতঘরে পানি উঠার কারণে গোয়াল ঘরের গরু রাতদিন পানির উপর দাড়িয়ে রয়েছে। এতে করে গবাদিপশু মারাত্মক ঝুকির মূখে পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন,উপজেলা দুর্যোগ কমিটির জরুরী সভা করেছি। বন্যা আক্রান্ত পরিবার গুলো ও আশ্রয় কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারী রয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার নিন্মাঞ্চলের মানুষের বসতবাড়িতে পানি উঠছে,গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরনের প্রস্তুত চলছে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি