ডিসির চেয়ারে বসে ফেসবুকে পোস্ট, অতঃপর গ্রেফতার

;
  • প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২০, ৭:২০ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৫ বছর আগে

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বাংলোতে বন্ধুদের নিয়ে গোপনে প্রবেশ করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করায় এক প্রতারককে আটক করেছে জেলা প্রশাসন। পরে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে মুচলেকা প্রদান করায় পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের জিম্মায় তাকে মুক্তি প্রদান করে জেলা প্রশাসন। তবে সেখান থেকে মুক্তি পেলেও শেষ রক্ষা হয়নি প্রতারক আফজলের। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পরই বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

জেলা প্রশাসনসূত্র জানা যায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গোপনে জেলা প্রশাসকের বাংলোতে প্রবেশ করে প্রতারক আফজাল হোসেন। বাংলোতে চেয়ারে বসে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে আফজল। রাতেই বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের। পরে তার নির্দেশে প্রতারক আফজলের মোবাইল ট্রেকিং করে অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাকে ফোন করা হলে সে ভূয়া ঠিকানা প্রকাশ করে সে। আজ দুপুরে প্রশাসনের লোকজনের নেতৃত্বে কৌশলে প্রতারক আফজল ও তার সহযোগীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির করা হয়। পরে ভুল স্বীকার করে মুচলেকা প্রদান করায় তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়।

এদিকে প্রতারক আফজল আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সদর থানা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন। আফজলের প্রতারণার শিকার বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশতাধিক লোক অবস্থান নেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে। এরই মধ্যে হবিগঞ্জ সদর থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শায়েস্তানগর এলাকার ঠিকাদার মোহাম্মদ টিপু। অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়, শহরে বড় ধরণের কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক আফজাল। পরে তাকে গ্রেফতারের জন্য হবিগঞ্জ মডেল থানার ওসি মাসুক মিয়া ও ইনস্পেক্টর দৌস মোহাম্মদের নেতৃত্বে পুলিশ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যায় আফজল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

এদিকে আফজলের আটকের পর মুখ খুলতে শুরু করেন প্রতারণার শিকার লোকজন। অভিযোগে বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল। দেশের বড় বড় মন্ত্রী, এমপি ও সরকারী-বেসরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিত আফজল। চাকুরী, বদলী, জামিনসহ বিভিন্ন তদবীরের নামে লোকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আফজল। সরকারের উপরের মহলের সাথে দহরম-মহরম রয়েছে এমন প্রচারণা চালাতো আফজল। তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে সাহস করেনি কেউ। অবশেষে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আটকের পর কয়েক ডজন প্রতারণার অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে। প্রতারক শাহ আফজল হোসেন সদর উপজেলার আউশপাড়া গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে।

শেয়ার করুন

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি